নিয়মিত মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট না করলে সেই সফটওয়্যারগুলোর রিয়েলটাইম পারফরম্যান্স পাওয়া যায় না।

অনেক সময় দেখা যায় এই সফটওয়্যার আপডেট না করায় মোবাইল স্লো হয়ে যায়। এমনকি হ্যাং পর্যন্ত হয়ে যায়।

সব মিলিয়ে কথা হচ্ছে নিয়মিত মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট না করলে আপনার মোবাইলের একটু ক্ষতি হতে পারে।

আপনি কি জানেন নিয়মিত মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট দিলে মোবাইল অনেক ফাস্ট হয়। এবং হ্যাংও হয় না। আবার মোবাইলের সিকিউরিটিও অনেক শক্ত হয়। তাই মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট দেয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন। এবং নিয়মিত মোবাইল সফটওয়্যার এবং সেটিং আপডেট দিন।

আর, মোবাইলের সফটওয়্যার রীতিমতো আপডেট করলে মোবাইল অনেকটা ফাস্ট হয়ে যায়। তাই এই পোস্টের মাধ্যমে জেনে নিন কিভাবে আপনার মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট করবেন।

সফটওয়্যার আপডেট কি?

আমরা প্রয়োজনে অনেক সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি। এই সফটওয়্যারগুলোতে অনেক ফিচারস থাকে।

যেগুলো বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রয়োজন হয়ে থাকে। কিন্তু কখনো মনে হয় যে অমুক সফটওয়্যারটিতে যদি তমুক ফিচার থাকতো তাহলে ভালো হতো।

যেমনঃ আপনি একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করেন যেটাতে ইউটিউব এবং ফেসবুকের ভিডিওগুলো সহজেই ডাউনলোড করতে পারবো।

আবার মাঝে মাঝে আপনি টিকটক ভিডিও ডাউনলোড করে থাকেন। কিন্তু সেই অ্যাপসটিতে আর টিকটক ভিডিও ডাউনলোড করা যায় না।

তাই ডেভেলপার’রা সেই অ্যাপসটিতে টিকটক ভিডিও ডাউনলোড করা ফিচারটি যুক্ত করেছে। ফিচারটি যুক্ত হবার সাথে সাথে আমাদের মতো ইউজার’রা ইউজ করতে পারবে না।

কারণ, ডেভেলপার’রা যে ফিচারটি যুক্ত করেছে সেটা পুরোনো সফটওয়্যারটির অনলাইন ফাইলে যুক্ত করে দিয়েছে।

তাই আপনাকে আগে অনলাইন ফাইলটি পুরোনো ফাইলে আপলোড করতে হবে। আর এই প্রক্রিয়াকে সফওয়্যার আপডেট বলে।

অনেকের কাছে হয়তো ব্যাপারটি বুঝতে জটিল মনে হতে পারে। সহজ কথায় কোনো সফটওয়্যারে নতুন ফিচার যুক্ত করাকেই সফটওয়্যার আপডেট বলে।

কেনো মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট করবো?

মোবাইলের ভালো পারফরম্যান্স পেতে চাইলে অবশ্যই সফটওয়্যার আপডেট করতে হয়। এমনকি সফটওয়্যার আপডেট করলে কিছু ত্রুটির সমাধান হয়ে যায়।

আর, প্রতিটা মোবাইলের সিকিউটির বিষযটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে আপনি যদি প্রতিনিয়ম সপটওয়্যারগুলো আপডেট না করেন তাহলে সহজেই যেকোনো ম্যালওয়্যার আপনার মোবাইলে প্রবেশ করতে সক্ষম হবে।

ফলে আপনার মোবাইল হ্যাং হওয়া কিংবা গুরুত্বপূর্ণ আইডিগুলো যেমনঃ ফেসবুক আইডি, জিমেইল আইডি ইত্যাদি হ্যাক হতে পারে।

সব মিলিয়ে একটা মোবাইলের ভালো পারফরম্যান্স এর জন্য এবং স্ট্রং সিকিউরিটির জন্য নিয়মিত মোবাইলের অ্যাপসগুলো আপডেট দেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট করতে কি কি লাগে?

সাধারণত একটা মোবাইলের সফটওয়্যার আপডেট করতে চাইলে স্টোরেজ খালি থাকা লাগে। মানে আমরা যেটাকে মেমোরি বলি সেই মেমোরি খালি থাকতে হবে।

আর, আপনার মোবাইলে ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই হবে। তাহলেই আপনি আপনার মোবাইলের অ্যাপসগুলো আপডেট করতে পারবেন।

সেক্ষেত্রে আপনার মোবাইলের সেট মেমোরি খালি রাখতে হবে। যদি আলাদা মেমোরি সেট করেন তাহলে হবে না।

কিভাবে সফটওয়্যার আপডেট দিতে হয়

সপটওয়্যার আপডেট দেয়া একেবারেই সহজ। আপনি যদি এন্ড্রোয়েড ইউজার হয়ে থাকেন তাহলে আপনার মোবাইলে একটি অ্যাপস স্টোর থাকবে।

সেটা হলো গুগল প্লে স্টোর। এই স্টোরটা প্রতিটা এন্ড্রয়েড মোবাইলে ডিফল্টভাবে থাকবে। তাই আপনাকে আর আলাদা করে ভাবতে হবে না।

যারা স্যামসাং মোবাইল ইউজ করেন তাদের জন্য আলাদা করে একটা স্যামসাং অ্যাপ স্টোর থাকে।

তবে আপনাকে আগে চেক করে নিতে হবে যে আপনার সফটওয়্যার গুলো কোন স্টোর থেকে ডাউনলোড করা।

এটা তেমন কোন কঠিন কাজ নয়। আপনি যখন মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট করবেন তখনই আপনি জানতে পারবেন আপনার সফটওয়্যার গুলো কোন স্টোর থেকে ডাউনলোড করা হয়েছে।

তবে প্রতিটা এন্ড্রয়েড মোবাইলে গুগল প্লে স্টোর থেকে সফটওয়্যার ডাউনলোড করা হয়ে থাকে। তাই আমরা আজকে দেখাব গুগল প্লে স্টোর থেকে কিভাবে মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট করতে হয়।

মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট করুন

আপনার মোবাইলে যত অ্যাপস ইনস্টল করা আছে তার সবগুলোর আপডেট চেক করা এবং আপডেটের প্রয়োজন হলে আপডেট করে নিন।

মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট করা খুবই সহজ। নিচের স্টেপগুলো ফলো করুন। তাহলে সহজেই আপনার মোবাইলের ইনস্টল করা সকল সফটওয়্যার আপডেট করতে পারবেন।

  • মোবাইল থেকে গুগল প্লে স্টোর সফটওয়্যারটি ওপেন করুন।
  • ওপেন হবার পর উপরে ডানপাশে কোনায় প্রোফাইল আইকন দেখতে পাবেন।
  • সেই আইকনে ক্লিক করার পর আরেকটা পেজ আসবে।
  • যেটার শুরুতে “Manage apps and device” লেখা থাকবে।
  • অপশনটিতে ক্লিক করলে একটা ওভারভিউ পেজ আসবে।
  • সেখানে দ্বিতীয় অপশনটি চেক করবেন।
  • এবং “Check for update” এ ক্লিক করবেন।

তাহলেই দেখতে পারবেন যে আপনার মোবাইলে যতগুলো অ্যাপস আপডেট লাগবে তার তালিকা দেখতে পারবেন।

যারা নিয়মিত অ্যাপস আপডেট করে না তাদের মোবাইলে ২৭ থেকে ৩৩ টা অ্যাপস আপডেট এসে থাকে।

আপনারা “আপডেট অল” এ ক্লিক করে সবগুলো আপডেট করে নিবেন। এক্ষেত্রে একটা একটা করে আপডেট হতে থাকবে।

আপডেট চলাকালীন অন্যান্য সকল তাজ করতে পারবেন।

সফটওয়্যার আপডেট দিলে কি হয়

যে সফটওয়্যার আপডেট দিবেন সে সফটওয়্যারে পারফরম্যান্স বৃদ্ধি পায়। এবং অ্যাপসটিতে কোনো ত্রুটি থাকলে ডেভেলপার যদি ত্রুটি মুক্ত করে তাহলে স্ট্রং সিকিউর হবে।

এছাড়াও প্রতি আপডেটে ডেভেলপাররা নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করে। যেটা ইউজার ফ্রেন্ডলি হয়ে থাকে।

আর, মোবাইলের ক্ষেত্রে আপনি যখন কোনো অ্যাপস আপডেট দিতে থাকবেন তখন ওই অ্যাপসটিতে প্রবেশ করলে আপনাকে বের করে দিতে পারে।

কারণ, অ্যাপসটি যখন আপডেট হয় তখন পুরোনো ফাইলের সাথে নতুন ফাইল ইনস্টল হয়। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই।

আপনাকে শুধুমাত্র একবাররই অ্যাপস থেকে বাহির করে দিবে। তাও আপডেট চলাকালীন অ্যাপস এর ভিতরে থাকলে।

এরপর থেকে স্বাভাবিকভাবে যখন ইচ্ছা তখন অ্যাপসে প্রবেশ করতে পারবেন।

সেটিং আপডেট

আমরা যখন বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে থাকি তখন সে অ্যাপসগুলোকে আপডেট (হালনাগাদ) করে থাকি।

সেরকম পুরো মোবাইলের এন্ড্রয়েড ভার্সনটিকেও রীতিমত আপডেট রাখতে হয়। এতে করে একটা মোবাইলে রীতিমতো নতুন নতুন ফিচার এবং সিকিউরিটি স্ট্রং হয়।

একটা মোবাইলের সেটিং আপডেট করলে সেই মোবাইলে যদি কোনো ত্রুটি থাকে সেগুলো ডেভলপাররা সংশোধন করে আপডেট করে।

তাই সেটিং আপডেট করলে আপনার মোবাইলে যদি কোনো ত্রুটি থাকে সেই ত্রুটি দূর হয়ে যাবে। এবং মোবাইল কোম্পানি থেকে নতুন নতুন ফিচার আসতে থাকবে।

সেই ফিচারের মধ্যে থাকে নতুন নতুন সফটওয়্যার। এবং মোবাইল কাস্টমাইজেশন। মানে মোবাইলের ইউজার ইন্টারফেস আরো আকর্ষণীয় করা হয়।

একটা মোবাইলের সেটিং আপডেট দেওয়া সফটওয়্যার আপডেট দেওয়ার মতোই। মানে মোবাইলের সেটিং আপডেট দেওয়াও অনেক সহজ।

মোবাইল আপডেট দেওয়ার নিয়ম

মোবাইল সেটিং আপডেট দেওয়া কিছুটা মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট দেওয়ার মতোই। সাধারণত মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট দেওয়া হয় সফটওয়্যার স্টোর থেকে।

আর মোবাইল সেটিং আপডেট দেওয়া হয় মোবাইলের সেটিং সফটওয়্যার থেকে।

আগে যেটা বলেছি সেটা হচ্ছে আমরা প্রতিনিয়ত যে অ্যাপস গুলো ব্যাবহার করে সেগুলোর আপডেট।

এখন যেটা সেটা হচ্ছে পুরো মোবাইলের অপারেটিং আপডেট। সাধারণত আমাদের দেশে আইফোন ইউজারের থেকেও অ্যান্ড্রয়েড ইউজারের সংখ্যা বেশি।

তাই বেশিরভাগ মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড। তাই আমি আজকের পোষ্টে দেখাবো কিভাবে এন্ড্রয়েড মোবাইল আপডেট দিতে হয়।

যদি এখানে কোন আইফোন ইউজার থেকে থাকেন তাহলে কমেন্ট করে জানিয়ে দিন আমি তাদের জন্য আলাদা করে পোস্ট আপলোড দেবো।

এন্ড্রয়েড মোবাইলের সেটিং আপডেট দিতে হলে প্রথমে,

  • আপনার মোবাইলের সেটিং সফটওয়্যার ওপেন করুন।
  • সার্চ বারে গিয়ে “Software Update” লিখে সার্চ করুন।(কিছু কিছু মোবাইলের সেটিং এ সার্চ দেওয়ার অপশন থাকে না)
  • যাদের মোবাইলে সেটিং এ সার্চ দেওয়ার অপশন থাকে না তারা “About Phone” অপশনটিতে গিয়ে Software Update অপশনটি খুঁজে নিবেন।
  • এরপর “Check for update” বাটনে ক্লিক করবেন।
  • যদি আপনার মোবাইলের সেটিং আপডেট আসে তাহলে এখানে ডাউনলোড হতে থাকবে।
  • আর যদি কোন আপডেট না আসে তাহলে “this is already latest version” লেখা থাকবে।

মোবাইলের সেটিং আপডেট হওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম নিয়ে নতুন ভার্সনটি ডাউনলোড হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই ইন্টারনেট কানেকশন লাগবে।

আর যখনই আপনার সেটিং এর নতুন ভার্সনটি ডাউনলোড হবে তখন ইন্সটল করার অপশন আসবে। এক্ষেত্রে আপনাকে মনে রাখতে হবে যে ইনস্টল করা মানে মোবাইল সেটিং আপডেট দেওয়া।

তাই আপনি যদি এখনই আপডেট দিতে চান তাহলে ইনস্টল বাটনে ক্লিক করুন। আর যদি চান আরও পরে আপডেট দিবেন তাহলে পরে ইনস্টল বাটনে ক্লিক করবেন।

তবে আপনাকে এটা মনে রাখতে হবে যে মোবাইল আপডেট দিলে কিছু পরিবর্তন হয়।

মোবাইল আপডেট দিলে কি হয়

একটা মোবাইল ফোনে যখন সেটিং আপডেট দেওয়া হয় তখন পুরো মোবাইল রিবুট অথবা রিস্টার্ট হয়ে যায়।

যখন মোবাইলটি রিবুট হয় তখন কিছু সময় লাগে। মোবাইলের ব্র্যান্ড ভেদে সময় ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।

যেমন ভিভোর কিছু মোবাইলে অতি অল্প সময়ে নতুন সেটিং আপডেট হয়ে মোবাইল রিবুট থেকে ওপেন হয়ে যায়।

আবার ওপোর বেশিরভাগ মোবাইলে সেটিং আপডেট দিলে রিবুট থেকে ওপেন হতে অনেক সময় লাগে।

টিপসঃ আপনি যখন ফ্রি থাকবেন, মানে যখন আপনার মোবাইলে কোনো কাজ থাকবে না তখন আপনার মোবাইল আপডেট দিবেন।

মোবাইল রিবুট হওয়ার পাশাপাশি কিছু নতুন ফিচার যুক্ত হয়। যেমন অনেক সময় মোবাইল কোম্পানির নির্দিষ্ট কিছু সফটওয়্যার অটোমেটিক ইন্সটল হয়ে যায়। (তবে এটা সেটিং আপডেট দেওয়ার পর)

শেষ কথাঃ

আপনি যদি আপনার মোবাইল সফটওয়্যার আপডেট দিতে চান তাহলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস রয়েছে যেগুলো আজকের পোস্টে আলোচনা করেছি।

আশা করি আজকের পুরো পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করে দিন ধন্যবাদ!

আরও পড়ুনঃ