এমন অনেক মোবাইল আছে যেগুলো শুধুমাত্র ভাইরাসের কারণে হ্যাং অথবা স্লো হয়ে যায়। কিন্তু যদি আবার মোবাইল এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় তাহলে কিছুটা ফাস্ট হয়ে যায়।

আপনার মোবাইল কি হ্যাং বা স্লো হয়ে যাচ্ছে? তাহলে আপনি একটি জনপ্রিয় মোবাইল এন্টিভাইরাস সফটওয়্যাার ব্যবহার করুন।

তাই আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব কিভাবে আপনার হ্যাং অথবা স্লো হয়ে যাওয়া মোবাইলকে মোবাইল এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার দিয়ে ফাস্ট করে নিবেন।

এবং পরবর্তীতে সেই এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারগুলো ব্যবহার করলে আপনার মোবাইল সহজেই স্লো কিংবা হ্যাং হয়ে যাবে না।

অর্থাৎ বলতে পারেন আপনার মোবাইলের নিরাপত্তা এবং সুপারফাস্ট গতি রাখার জন্য এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার এর ব্যবহার, এবং কোন এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারগুলো সেরা হবে তা আজকে জানতে পারবেন।

মোবাইলে কিভাবে ভাইরাস প্রবেশ করে?

সবার আগে বুঝতে হবে মোবাইলে ভাইরাস কেন হয়। কিংবা কিভাবে এ ভাইরাসগুলো মোবাইলে প্রবেশ করে।

মোবাইলে কিভাবে ভাইরাস প্রবেশ করে এর সঠিক কোন উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ ইন্টারনেট যতই উপলব্ধি হচ্ছে ততই ভাইরাসের আনাগোনা ততই বেড়ে যাচ্ছে।

তবে প্রধান দুই থেকে তিনটি কারণ থাকে যেগুলোর কারণে মোবাইলে ভাইরাস হয়ে থাকে। সেগুলো হলোঃ পেনড্রাইভ বা মেমোরি কার্ড, ক্র্যাক অথবা পাইরেটেড সফটওয়্যার, ইন্টারনেটের মাধ্যমে।

পেনড্রাইভ বা মেমোরি কার্ড

এর মাধ্যমে যখন কোন ফাইল এক স্টোরেজ থেকে আরেকটি স্টোরেজে কপি করে নেওয়া হয়, তখন যে স্টোরেজ থেকে ফাইল কপি করে নেওয়া হয় সেই স্টোরেজে লুকানো ভাইরাসের ফাইলগুলো কপি হয়ে অন্য স্টোরেজের প্রবেশ করে।

তাই কোন মেমোরি কার্ড বা পেনড্রাইভ থেকে ফাইল নেওয়ার প্রয়োজন হলে আগে দেখবেন যে মেমোরি কার্ডটি নতুন কিনা।

অথবা মেমোরিটিতে কোনো ভাইরাস আছে কিনা? এভাবে আগে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে নিন। তারপর পেনড্রাইভ বা মেমোরি কার্ড থেকে ফাইল কপি করবেন।

ক্র্যাক অথবা পাইরেটেড সফটওয়্যার

বলতে বুঝায় যে সকল সফটওয়্যার কিনতে টাকা লাগে। অর্থাৎ যেগুলো প্রিমিয়াম সেই প্রিমিয়াম সফটওয়্যার গুলো যদি কোথাও ফ্রিতে পাওয়া যায়, অথবা ফ্রিতে নেওয়া হয় তখন সে সফটওয়্যারটিকে ক্র্যাক অথবা পাইরেটেড সফটওয়্যার বলা হয়।

ক্র্যাক করা সফটওয়্যার গুলো মূলত কোন প্রতিষ্ঠান আগেই প্রিমিয়াম ভার্শন কিনে নেয়। তারপর সেই সফটওয়্যারটিকে থেকে নিজের মতো করে কাস্টমাইজ করে। তারপর ফ্রিতে উপলব্ধি করে দেয়।

তারা যখন সফটওয়্যারটিকে কাস্টমাইজ করে তখন সে কাস্টমাইজ করা সফটওয়্যারটিতে যেকোনো ধরনের ভাইরাস প্রবেশ করাতে সক্ষম হয়।

এর ফলে যদি কেউ ক্র্যাক করা সেই সফটওয়ারটি ডাউনলোড করে ব্যবহার করে তাহলে সহজেই তার মোবাইলে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। কিংবা তার মোবাইল হ্যাকও হতে পারে।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভাইরাস প্রবেশ

এর প্রধান কারণ হলো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা। আমরা অনেক সময় অনেক কারণে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে থাকি।

বিশেষ করে সবগুলো সাইট সিকিউর (নিরাপদ) হয় না। এর ফলে সহজেই মোবাইল অথবা কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করে।

আপনি যখন কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন তখন প্রথমে যে ইউআরএলটি দেখবেন সেই ইউআরএলটিতে 🔒 (তালা) আছে কিনা!

যদি না থাকে তাহলে সাইটটি থেকে বের হয়ে যাবেন। আর যদি কোনো সাইটে এমন কিছু পারমিশন চায় যেগুলো আপনার মোবাইলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তাহলে আপনি সেই পারমিশনগুলো দিবেন না। কারণ কিছু ভাইরাস প্রবেশের আগে পারমিশন চায়। আর কিছু ভাইরাস পারমিশন চায় না।

অর্থাৎ ইচ্ছাকৃতভাবে কিংবা আমাদের অজান্তেই আমরা আমাদের মোবাইলে ভাইরাস গুলো প্রবেশ করতে দিই।

মোবাইলে ভাইরাস দূর করার উপায়

যখন ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় মোবাইলে ভাইরাস প্রবেশ করে তখন দ্রুত সময়ে সে ভাইরাস গুলো ডিলিট করতে হয়। না হলে মোবাইলের বিশাল ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

মোবাইল হ্যাং অথবা স্লো হওয়ার পাশাপাশি মোবাইল হ্যাকও হয়ে যেতে পারে। তাই সচেতনতা এবং ভাইরাস দূর করার জন্য মোবাইলে এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয়।

তবে এন্টিভাইরাস ব্যবহার করার আগে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। যাতে কোনোভাবেই মোবাইলে ভাইরাস প্রবেশ করতে না পারে।

উপরে ভাইরাস প্রবেশ করার যে কারণগুলো উল্লেখ করেছি সেগুলোতে সচেতন থাকলে আশা করা যায় আপনার মোবাইলে খুব কম ভাইরাস প্রবেশ করতে পারবে।

ভাইরাস দূর করার জন্য যেমন তেমন এন্টিভাইরাস ব্যবহার করলে হবে না। আপনাকে অবশ্যই ভালো কোয়ালিটির কিছু এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে।

আজকে আমি আপনাদেরকে ভালো কিছু এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার এর নাম বলে দিবো। যেগুলো ব্যবহার করলে আপনার অবশ্যই লাভ হবে।

এবং সবগুলো এন্টিভাইরাস ফ্রি। তাই সহজেই ফ্রি এন্টিভাইরাস ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

মোবাইল এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার

বর্তমান সময়ের সেরা এবং সবচেয়ে কার্যকরী মোবাইল এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার হচ্ছে Phone manager।

এই সফটওয়্যারটি সাধারণতঃ মোবাইলের সাথেই থাকে। যারা কোনো নতুন মোবাইল কিনে তাদের মোবাইলে সাথে একটা এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার থাকে।

আর সেই সফটওয়্যারটিই হলো Phone manager. তবে সবার মোবাইলে এই সফটওয়্যারটি থাকে না। থাকলেও দেখা যায় এই নামেই থাকে না।

অন্য কোন নামে থাকলে থাকতে পারে। তবে গত এক বছর কিংবা এর আগের মোবাইল গুলোতে এই এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারটি দেখা যায়।

কিন্তু দুই/তিন বছর আগের মোবাইলগুলোতে এই এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারটি থাকে না। তাই তাদেরকে আলাদা করে এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইন্সটল করতে হয়।

১. Phone manager – এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার

মনে রাখবেন মোবাইলের সাথে যদি কোন এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার দিয়ে থাকে তাহলে, সেই সফটওয়ারটি সবচেয়ে সেরা হবে।

আমাদের দেশের মোবাইলগুলোতে গত এক থেকে দুই বছর আগে থেকে এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার দিয়ে থাকে।

কিন্তু এর আগের মোবাইলগুলোতে কোন প্রকার এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার না থাকায় দ্রুত সে মোবাইলগুলোতে ভাইরাস প্রবেশ করে।

তাই তাদের জন্য আলাদা করে একটা এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইন্সটল করতে হবে। গুগল প্লে স্টোরে অনেক এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার রয়েছে।

কিন্তু সেখান থেকে যেগুলো সেরা হবে সেগুলো আপনাদের জন্য বাছাই করে একটি তালিকা তৈরি করেছি।

২. AVG Antivirus ઠ Security – এন্টিভাইরাস

এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোরে যতগুলো এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার রয়েছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রেটিং পেয়েছে এই সফটওয়্যারটি।

মানে বলতে পারেন সবচেয়ে জনপ্রিয় এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার মধ্যে এই সফটওয়্যারটি সেরা। কারণ সবচেয়ে বেশি মানুষ এই সফটওয়্যাটি সম্পর্কে তাদের পজিটিভ রিভিউ দিয়েছে।

এবং এই এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারটিতে অসংখ্য ফিচার রয়েছে। যেগুলোর মাধ্যমে আপনার মোবাইলকে ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে পারবেন। যেমনঃ

১. Quick Scan

২. Boost RAM

৩. Clean Junk

৪. Scan Wi-Fi

৫. VPN protection

৬. App Insights

৭. Encrypt photo

৮. Password Protection

৯. Reclaim wasted memory

১০. Get  password leak alerts

মানে বুঝতেই পারছেন যে আপনার মোবাইলের ভাইরাস দূর করার পাশাপাশি মোবাইলকে হ্যাক হওয়া থেকে সুরক্ষা করবে।

তাই আপনার মোবাইলের ভাইরাস দূর করতে AVG Antivirus ઠ Security সফটওয়্যারটি ইনস্টল করুন।

৩. Avast Antivirus ઠ Security – এন্টিভাইরাস

দ্বিতীয় জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে Avast Antivirus ઠ Security সফটওয়্যারটি। এবং এই এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারটির প্রতিষ্ঠাতারা বলছে 435 মিলিয়নেরও বেশি মানুষ তাদের সার্ভিস দিয়ে ভাইরাস থেকে নিরাপদে আছে।

এই এন্টিভাইরাসটির ফিচারগুলো প্রায় আগের সফটওয়্যারটির মতো। তাই এর বিবরণ দিয়ে লেখা বেশি করি নি।

তবে, আপনারা যেই মোবাইল এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার-ই ব্যবহার করেন না কেনো একটাই করবেন। অনেককগুলো ব্যবহার করলে সুফলের বিপরীতে কূফলও হতে পারে।

শেষ কথাঃ

আপনাদের যাদের মোবাইলে ভাইরাসের কারণে হ্যাং হয়ে গেছে তারা মোবাইল এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করে মোবাইলের স্পিড বেশি করতে পারবেন।

পুরো ব্লগটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপনি যেকোনো একটি এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনার মোবাইলকে সুরক্ষা করতে পারেন।

আশা করি আজকের ব্লগ টি আপনাদের অনেক উপকারে এসেছে। যদি ব্লগটি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ!

আরও সম্পর্কিত পোস্টঃ