ব্লগিং এর প্রতি উদ্বেগ প্রায় বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয় ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়, কিংবা প্রতি ভিউতে কত টাকা আয় হয়।

অনেকেই জানতে চায় যে, ব্লগিং করে মাসে কত টাকা আয় হয়। এবং ব্লগিং করার কতদিন পর ব্লগিং থেকে আয় হয়।
তাই আজকের এইসকল বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার নিজ অবিজ্ঞতা থেকে। বা আমি কত টাকা আয় করি।
ব্লগিং করে কিভাবে আয় করা যায়
যারা নতুন বা যারা ব্লগিং করবে বলে ভাবছে তাদের অনেকেই জানে না যে, ব্লগিং করে কিভাবে আয় করা যায়।
অথবা ব্লগিংএ আয় হয় কিভাবে। এসকল প্রশ্ন নতুনদের সাথে আপনিও আজকে এই ব্লগের মাধ্যমে জেনে নিন।
ব্লগিংএ আয়ের অনেক উৎস থাকলেও প্রধান বা বেশি লাভজনক উৎস দুইটা।
- বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়
- এফিলিয়েট মার্কটিং করে আয়
ব্লগিং করে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কিভাবে আয় হয়।
বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়ের সিস্টেমটা হচ্ছে: বিজ্ঞাপন দাতারা আপনার সাইটে বিজ্ঞাপন দেখাবে। এবং তাদের লাভের একটা অংশ আাপনাদের সাথে শেয়ার করবে।
মার্কেটে অনেক বিজ্ঞাপন দাতা বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যাদের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট মনিটাইজেশন করে আয় করতে পারবেন।
এখন কথা হচ্ছে বিজ্ঞাপন দাতারা এত বিজ্ঞাপন কোথা থেকে পায়? বা তারাই কি সকল বিজ্ঞাপন দেখায়?
মোটেও তা নয়! বিজ্ঞাপন দাতাদেরকে আপনি মধ্যস্থকারীও বলতে পারেন। আপনাদেরকে একটু বুঝিয়ে বলি।
আমাদের অনেক লোকাল কোম্পানি রয়েছে। যেমন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দারাজ। মোবাইল সিম কোম্পানি গ্রামীন, রবি ইত্যাদি।
এই কোম্পানি বা আমাদের লোকাল কোম্পানিগুলো তাদরে প্রমোটের জন্য বিজ্ঞাপন করে থাকে। কিন্তু তারা সরাসরি কোনো সাইটে বিজ্ঞাপন দেখাতে পারে না।
না পারার কারণ হচ্ছে তারা একটা বিজ্ঞাপন দেখাবে। কিন্তু তারা তো প্রতিটা ওয়েবসাইট বা যারা ব্লগিং করে তাদের সবার সম্পর্কে তো কোম্পানিদের জানা নেই।
তাই তারা এমন একটা কোম্পানির সাহায্য নেয়, যারা সাইট মনিটাইজেশন করে থাকে। সাইট মনিটাইজেশনের অনেক কোম্পানি রয়েছে।
সেই কোম্পানিগুলোকে তাদের করা বিজ্ঞাপনটি দেয়। এবং সেই বিজ্ঞাপনটি আমাদের ওয়েবসাইটে দেখানোর জন্য বিজ্ঞাপনদাতাকে কিছু টাকা দেয়।
যখনি কোনো ভিজিটর আসে এবং সেই বিজ্ঞাপনটিতে ক্লিক করে তখন, বিজ্ঞাপনদাতা কোম্পানি থেকে পাওয়া অর্থের একটা পরিমান আমাদের দেয়।
এই পরিমানটা একেক বিজ্ঞাপনদাতা একেক পরিমানের দেয়। যেমন: সবচেয়ে জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনদাতা গুগল এডসেন্স তার কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের 68% দিয়ে থাকে।
তাই ব্লগিং করে আয়ের একটা অংশ বিজ্ঞাপন থেকে আসে। আর বিজ্ঞাপন থেকে কিভাবে আসে তা বুঝতে পেরেছেনে আশা করি।
ব্লগিংএ এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়।
ব্লগিং এ আরেক প্রধান আয় হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং করে। এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার পদ্ধতি আমি আগেও আলোচনা করেছি।
তাই জেনে নিন এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার উপায় ☑
ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়
এর উত্তর মানে ব্লগিং করে আমি কত টাকা আয় করি, তা পরে বলছি। আগে আমরা গুগলের রিপোর্ট দেখবো যে, ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়।
সাধারণত ব্লগিং এ আয়ের পদ্ধতিতে রয়েছে অনেকগুলো ক্যাটাগরি। প্রতিটা ক্যাটাগরিতে গুগল ভিন্ন ভিন্ন পেমেন্ট দিয়ে থাকে।
যেমন: আমাদের এশিয়া দেশগুলোতে কেউ বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে ব্লগিং করলে তার যদি প্রতি মাসে 50,000 পেজ ভিউ থাকে তবে,
সে প্রতি বছরে গুগল থেকে 6336$ ডলার পেমেন্ট নিতে পারবে। যা মাসিক হিসেবে 528$ ডলারের মতো হয়।
তবে, শর্ত বা কাজ হলো প্রতি মাসে আপনাকে 50,000 ভিজিটর আনতে হবে। তবেই আপনি 528$ ডলার পেমেন্ট পেতে পারেন।
এটা কিন্তু অনেক। কোনো চাকরিজীবি বা ব্যবসায়ী মাসে টাকায় ৳44,880 টাকা আয় করতে তাকে অনেক কষ্ট করতে হয়।
তাই বলে চাকরি ছেড়ে ব্লগিং মোটেও যুক্তিসংগত নয়। এই পরিমান টাকা তারাই আয় করতে পারে যারা মাসে 50,000 ভিউ পায়।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে, ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় তার উত্তর হবে আপনার ভিউ যত বেশি আয়ও তত বেশি।
তাহলে ব্লগিং করে আমাদের কত টাকা আয় হয়।
এক কথায় সুবিধাজনক নয়! তবে, অনেকেই ভালো পরিমান আয় করে যেটা দিয়ে তাদের সংসার চালানোর মতো।
আমার কথা বললে, আমার সাইট খুবই নতুন। এই মাস হিসেব করলে আমার সাইটের বয়স ৪ মাসের মতো হবে।
যেহেতু আমার সাইট ছোট এবং কনটেন্টও কম তাই আমার আয়ও কম। আবার আমার সাইটে ভিজিটরও কম
গড়ে প্রায় প্রতিদিন 250 জন ভিউ আছে আমার সাইটে। বুঝতেই পারছেন যেহেতু ভিউ কম তাই ইনকামও কম।
যদি আমার ক্ষেত্রে বলি ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়, তাহলে বলবো এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সুবিধা করতে পারি নাই।
ব্লগিং করে আপনি কত টাকা আয় করতে পারবেন।
যদি ঠিক করেন যে, আপনিও ব্লগিং করবেন তবে, ভালো কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। জেনে নিন কনটেন্ট রাইটিং কি? এবং কিভাবে শুরু করবেন ☑
তারপরে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিবেন। চাইলে ফ্রিতেই ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। জেনে নিন কিভাবে ফ্রিতে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন মাত্র ৫ মিনিটেই ☑
আপনার সিলেক্ট করা ক্যাটাগরিতে যদি ভিজিটর বেশি থাকে এবং প্রতিযোগীতাও কম থাকে তবে, সহজেই আপনার কনটেন্টএ ভিজিটর বেশি পাবেন।
অনেকে নতুন শুরু করে কিন্তু তাদের সাইটে ভিজিটর নেই বললেই চলে। যদি এমনেই হয়ে থাকে তবে জেনে নিন কিভাবে সাইটে ভিজিটর বাড়ানো যায় ☑
তার আগে বলবো যদি আপনি ব্লগিং করার চিন্তা করেন তবে, ব্লগিং এর ভবিষ্যৎ কেমন হবে? ☑ তা জেনে নিন।
আপনি যদি চান যে, মাসে মোটামুটি একটা ভালো পরিমান এমাউন্ট আয় করবেন তবে, আপনাকে প্রফেশনালভাবে কাজ করতে হবে।
এবং প্রতিদিন আপনার সাইটে ২/৩ টা আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে। তারপরে আপনি মনিটাইজেশন করে নিবেন।
যদি গুগলের এডসেন্স ব্যবহার করেন তবেেএডসেন্স একাউন্ট খুলেই মনিটাইজেশন করতে পারবেন। তাই জেনে নিন গুগল এডসেন্স কি? এবং কিভাবে এডসেন্স একাউন্ট খুলতে হয় ☑
আপনার ইনকামটা সম্পূর্ন আপনার উপর নির্ভর করবে। আপনি যদি বেশি আর্টিকেল লিখেন আর বেশি ভিজিটর আনতে পারেন তবে, আপনার ইনাকামের পরিমানটাও একটু বেশিই হবে।
FAQ:
ব্লগিং এর ইনকাম সম্পূর্ণ ভিউ এবং সিপিসির উপর নির্ভর করে। ভিউর ক্ষেত্রে দেশ ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন সিপিসি রেট হতে পারে।
শেষ কথা:
আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের বুঝানোর চেষ্টা করেছি যে, ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এবং আয়ের উৎসগুলো কি কি।
এবং ব্লগিং এর আয়ের পদ্ধতিগুলো। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন। আর বুঝতে কোনো অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানিয়ে দিন। ধন্যবাদ