নভেম্বরের ১৩ তারিখে অফিশিয়ালভাবে বিনিময় তার কার্যক্রম শুরু করবে। তাই আপনিও যদি বিনিময় সেবাটি উপভোগ করতে চান তাহলে আপনাকে বিকাশ বিনিময় আইডি খুলতে হবে।
বাংলাদেশের সকল মোবাইল ফ্যানেন্সিয়ালগুলোতে এক ব্যাংকিং থেকে অন্য ব্যাংকিং এ টাকা লেনদেন করা যায় না।
অথচ এই ব্যাপারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।
মানে, আপনার যদি বিকাশ একাউন্টে টাকা থাক তাহলে কোনো কারনে যদি রকেট একাউন্টে টাকা পাঠানো লাগতো তাহলে আপনি তা করতে পারতেন না।
কিন্তু, নভেম্বরের শুরুর দিকে বিনিময় এর অফিশিয়ার কার্যক্রম শুরুর ঘোষনা দেয়।
যার মাধ্যমে আপনি বেশ কয়েকটি ব্যাংক এবং মোবাইল ব্যাংকিং এর আন্তঃলেনদেন করতে পারবেন।

যেহেতু অফিশিয়াল ভাবে ঘোষনা চলে এসেছে তাই আপনি নিশ্চিন্তে এই সেবাটি উপভোগ করতে পারবেন।
এজন্য আমি আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে দেখাবো কিভাবে বিকাশের মাধ্যমে বিনিময় আইডি খুলবেন।
বিনিময় কি?
আমরা সবাই জানি যে এক মোবাইল ব্যাংকিং থেকে অন্য মোবাইল ব্যাংকিং এ টাকা পাঠানো কিংবা টাকা রিসিভ করা যায় না।
অর্থাৎ আমার যদি একটি বিকাশ একাউন্ট থাকে তবে আমি লেনদেন করতে হলে শুধুমাত্র অন্য আরেকটি বিকাশ একাউন্টে লেনদেন করতে হতো।
এদিকে আমি চাইলে বিকাশ থেকে রকেট কিংবা রকেট থেকে বিকাশে কোনোভাবেই টাকা লেনদেন করতে পারবো না।
এই ব্যাপারটি আসলেই খুব সমস্যাজনক। তাই এই সমস্যা সমাধানের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে বিনিময়।
যার মাধ্যমে আপনি চাইলে একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল নেটওয়ার্ক থেকে অন্য মোবাইল ফাইন্যান্স এর নেটওয়ার্কে লেনদেন করতে পারবেন।
যেহেতু এখনও সকল মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল এর সাথে এই সেবার চুক্তিবদ্ধ হয়নি তাই আপনি চাইলে এখনই যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিং একটির সাথে অন্যটির লেনদেন করতে পারবেন না।
কোন কোন ব্যাংক অথবা মোবাইল ব্যাংকিং এ বিনিময় সেরা পাওয়া যাবে?
অফিশিয়ালি বিনিময় সেবা চালু হলেও সকল ব্যাংক এবং মোবাইল ব্যাংকিং এর সাথে বিনিময় কার্যক্রম এখনই শুরু হবে না।
জানা যায় যে মোবাইল ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে বিকাশ, রকেট এটুআইয়ের এমএফএস সেবা একপে সেবা বিনিময় যুক্ত হবে।
তবে এই মুহূর্তে আরেকটি জনপ্রিয় এমএফএস নগদ এই মুহূর্তে এই বিনিময় সেবার সাথে সংযুক্ত নেই। তবে পরবর্তী সময়ে আসতে পারে।
এছাড়াও সকল ব্যাংক এর সাথে বিনিময় যুক্ত হচ্ছে না।
এই মুহূর্তে যে সকল ব্যাংক বিনিময় যুক্ত হচ্ছে সেগুলো হচ্ছে সোনালী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক পূবালী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড।
বিনিময় সেবাটি কিভাবে কাজ করবে?
এই সেবাটি অর্থাৎ বিনিময় একটি ওয়েব বেইজ প্লাটফর্ম। আমাদের দেশ থেকে যারা পেপাল একাউন্ট খুলে থাকে তারা হয়তো এই ব্যাপারটি বুঝবে।
তবে এমএফএস অ্যাপসগুলোতে (বিকাশ, রকেট) বিনিময় এর অ্যাপস ভিত্তিক সার্ভিস থাকবে।
অনুমোদিত যেকোনো ফাইনান্সিয়াল অ্যাপস থেকে প্রথমে বিনিময় একাউন্ট খুলতে হবে।
বিনিময় একাউন্ট খোলা হয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবে বিকাশ কিংবা নগদে যেভাবে সেন্ড মানি করা হয় সেভাবে বিনিময় এর মধ্যে সেন্ড মানি এবং রিসিভ মানি থাকবে।
একজন ব্যক্তি যদি অন্য আরেকজন ব্যক্তিকে এক এমএফএস থেকে অন্য এমএফএস এ টাকা পাঠাতে চায় তাহলে উভয় ব্যক্তির বিনিময় আইডি থাকা বাধ্যতামূলক।
এবং প্রত্যেক বিনিময় ইউজার একটি করে ইউনিক নাম পাবে।
টাকা পাঠানোর সময় সেই ইউজারের নাম দিয়ে এবং টাকার অ্যামাউন্ট দিয়ে সর্বশেষ (বিকাশ থেকে সেন্ড করলে বিকাশ পিন দিয়ে) সহজে টাকা পাঠাতে পারবে।
বিকাশ বিনিময় আইডি খোলার নিয়ম
যেকোনো ব্যক্তি বিনিময় আইডি খুলতে চাইলে সহজেই বিকাশের মাধ্যমে খুলতে পারবেন। এমনকি বিনিময় আইডি খোলা বিকাশ একাউন্ট খোলার চেয়েও অনেক সহজ।
এই ক্ষেত্রে আপনাকে তেমন কোন ডকুমেন্টস দিতে হবে না। তবে শুধুমাত্র e-tin নম্বর লাগবে।
বিকাশ দিয়ে বিনিময় আইডি খুলতে চাইলে নিচের স্টেপগুলো ফলো করুনঃ
- বিকাশ অ্যাপে লগইন করুন।
- বিকাশ হোম পেজের একেবারে নিচের দিকে স্ক্রল করুন।
- অন্যান্য সেবাসমূহতে বিনিময় লেখাটি পেয়ে যাবেন।
- সেখানে ক্লিক করে “টিক আছে” বাটনে ক্লিক করুন।
- লোকেশন চালু করতে ভুলবেন না।
- বাকী অংশ ভিডিওতে দেখুন।
যেহেতু এটা টাকা-পয়সা লেনদেনের একটি সেবা, প্লায় আপনাদেরকে এই ব্যাপারটি খুব ভালো করে বুঝে নিতে হবে।
সেজন্য আমি লেখার মাধ্যমে না বুঝিয়ে একটি ভিডিও দিয়ে দিচ্ছি। নিচের এই ভিডিওটি দেখে নিন। তাহলে সহজেই বিকাশ বিনিময় আইডি খুলতে পারবেন।
আশা করি আপনারা সহজেই বিনিময় আইডি করতে পেরেছেন। যদি এই ভিডিওটি দেখার পরও আপনারা বুঝতে না পারেন তাহলে কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।
বিনিময়ে প্রতি হাজারে কত টাকা চার্জ কাটবে?
এখানে অনেকে বলে যে বিনিময় লেনদেন সম্পুর্ন ফ্রী। এই কথাটা মোটেও সত্য নয়। আপনারা যদি বিনিময়ের মাধ্যমে লেনদেন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাদেরকে নির্দিষ্ট একটা চার্জ দিতে হবে।
এখন কত টাকা চার্জ দিতে হবে তা বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাংলা ট্রিবিউন উল্লেখ করেছে যে,
- বিকাশ থেকে রকেটে টাকা পাঠাতে (প্রতি হাজারে) খরচ হবে ৫ টাকা।
- আর বিকাশ অথবা রকেট ইত্যাদি থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠাতে (প্রতি হাজারে) খরচ হবে ১০ টাকা।
আশা করি বাংলাদেশের নতুন এই সার্ভিসটি সম্পর্কে আপনাদের মোটামুটি একটা ধারণা হয়ে গেছে।
যখন বিনিময় সচরাচর হয়ে যাবে তখন আপনারা আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন।
শেষ কথাঃ
আপনি যদি বিকাশ থেকে বিনিময় আইডি খুলতে চান তাহলে সহজেই বিনিময় আইডি খুলতে পারবেন।
এখন কিভাবে সেই বিনিময় অ্যাকাউন্ট খুলবেন তা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপনি সহজেই বিকাশ বিনিময় আইডি খুলতে পারবেন।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে।
যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করে দিন ধন্যবাদ!