ফ্রিল্যান্সিং- শব্দটা খুবই পরিচিত। আমাদের অনেকে চায় ফ্রিল্যান্সিং করতে। তাই জেনে নিন ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন এবং কোথায় থেকে শুরু করবেন।
আজকে আমি আপনাদের বিস্তারিতভাবে বলবো যে, ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন, তাই আশা করি শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনার উপকারে আসবে।
সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং এর আগ্রহ কম বেশি সবার মাঝেই থাকে। বিশেষ করে বাংলাদেশিদের মধ্যেও ফ্রিল্যান্সিং এর আগ্রহ থাকে।
আমি আজকে আপনাদের শুধু এটা দেখিয়ে দিবো যে, আপনি যে ফ্রিল্যান্সিং করবেন আপনার কি কি প্রয়োজন বা কোন কোন সরঞ্জামের প্রয়োজন।
প্রয়োজনীয় ডিভাইস
একেবারেই প্রথমে বলতে গেলে প্রয়োজন নির্দিষ্ট ডিভাইস। কাজ করার জন্য একটি কম্পিউটার লাগবে। মোবাইল দিয়েও হবে।
তবে, আপনি যদি প্রফেশনালভাবে কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যই কম্পিউটারের প্রয়োজন হবে।
আপনি যদি মোবাইলের কথা চিন্তা করেন তবে, ফ্রিল্যান্সিং আপনার দ্বারা হবে না। কারন আপনি তো আর সেখানে কোনো হালকা কাজ করবেন না।
যেমন আপনি অনলাইনে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করতে চান। এখন মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার জন্য সেরকম পরিশ্রমও করতে হবে।
যাইহোক! আপনি প্রফেশনালভাবে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে চাইলে প্রয়োজনীয় ডিভাইস সংগ্রহ করে নিবেন। তাই আশা করি ডিভাইস সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট
দেখা গেলো আপনি কম্পিউটার কিনলেন। এখন কাজ করার জন্য বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে সবসময় একটিভ থাকতে হবে।
এখন যদি আপনি ইন্টারনেটের সাথেই কানেক্টেড না থাকেন তাহলে তো আর হবে না। আপনার জন্য ব্রডব্যান্ড বাধ্যতামূলক।
আপনার বাজেট থাকলে বেশি টাকার ব্রডব্যান্ড নিতে পারেন। তবে, আমার মনে হয় বাজেট কম থাকলে নিচে 1 এমবিপিএস ইন্টারনেটের প্রয়োজন। আপনি সেখানে মোবাইল ডেটা দিয়ে কাজ চালাতে পারবেন না।
যাইহোক! আমরা এটা বুঝলাম যে, ফ্রিল্যান্সিং করারা জন্য অবশ্যই কম্পিউটারের পাশাপাশি প্রয়োজন ইন্টারনেটের।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন
আপনি যদি ঠিক করেন যে, আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তবে আপনার প্রয়োজন ডিভাইস থেকে শুরু করে কিছু দক্ষতা।
বর্তমানে প্রতিযোগী অনেক বেশি। আপনি যদি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে চান তবে আপনার প্রয়োজন অধিক দক্ষতা।
কারণ বর্তমানে অনলাইনে আয় করা খুবই কঠিন। তবে কিছু কাজ আছে যেগুলোতে একটু টেকনিক করে অনলাইনে আয় করতে পারবেন।
তারপরে আপনাকে মার্কেটপ্লেসগুলোতে দক্ষ হতে হবে। বা মার্কেটপ্লেসগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।
কতটুকু দক্ষতা লাগবে
আপনি যেমন ভাবছেন যে, আপনি ফ্রিল্যান্সিং করবেন। এবং গুগলে সার্চ করলেন ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন ইত্যাদি।
তবে আপনি এটাও মনে রাখবেন যে, শুধু আপনি একা নন যিনি ফ্রিল্যান্সিং করতে আগ্রহী। আপনার মতো বিশ্বে লাখো মানুষ বসে আছে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য।
সুতরাং আপনি শুধুমাত্র একটি দেশ কিংবা একটি জাতির সাথে তুলনা করলে চলবে না। আপনি কিন্তু সারা বিশ্বের সাথে প্রতিযোগীতা করছেন।
কোনো এক সময় ছিলো যখন ইন্টারনেট সচরাচর ছিলো না। কিংবা কম্পিউটারও তেমন একটা দেখা যেতো না।
তখনকার সময়ে কোনো রকম কম্পিউটারের অফিশিয়াল কাজ শিখলেও অনলাইনে বা ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা যেতো।
এমনকি তখন কাজের মান ছিলো হাই কোয়ালিটির। প্রতিযোগীও কম ছিলো। মানে যেই কাজ শিখে কাজ করতে যেতো সেই কাজ পেতো।
কিন্তু এখনকার চিত্র ভিন্ন। বেকারের সংখ্যা বেশি। আবার অনলাইনে বা ফ্রিল্যান্সিং করেও আয় করার আগ্রহ বেশি মানুষের মধ্যে।
তাই আপনি যদি মনে করেন কোনো একটা কাজ শিখেই ফ্রিল্যান্সিং করে হাজার হাজার টাকা আয় করবেন তাহলে আপনার ধারনায় অনেক ঘাটতি রয়েছে।
আগে একটা সফটওয়্যার কাস্টমাইজ করার জন্য লোক খুঁজে পাওয়া যেতো না। খুববই কম লোক ছিলো। তারা কাজও পেতো আবার সেই কাজের বিনিময়ে ভালো টাকা পেতো।
আর এখন দেখা যায় যিনি কাজটা করিয়ে নিবেন তার চেয়ে বেশি আছে যারা কাজ করবে। তাহলে যেই লোকটা কাজ করিয়ে নিবে তিনি কাকে কাজ দিবেন?
অবশ্যই যার কাজের কোয়ালিটি ভালো। কারণ এখন ফ্রিল্যান্সারে অভাব নেই। আপনি কাজ না করলে কি হয়েছে আপনার মতো হাজারো লোক বসে আছে কাজ পাওয়ার জন্য।
এই সমস্যা থেকে শুরু হয় কাজের মানের নিম্নতা। আগে যেই কাজ ১০০ ডলারে বায়াররা করিয়ে নিতো এখন সেই কাজ ৫ ডলারের করিয়ে নিচ্ছে।
তাও আবার সবাই সেই ৫ ডলারের কাজটি পায় না। আশা কির বুজতে পেরেছেন আপনাকে কি করতে হবে।
আপনাকে যা করতে হবে তা হলো আপনার দক্ষতা। আপনি যদি অল্প দক্ষতা নিয়ে কাজ করতে নামেন, তবে, আমি বলবো আাপনি সফল হতে পারবেন না।
যোগাযোগের দক্ষতা (ইংরেজি জানা)
খুবই গুরুত্বপূর্ন একটা বিষয় হলো কমিউনিকেশন স্কিল। বা যোগাযোগ দক্ষতা। আপনি যখন ফ্রিল্যান্সিং করার সময় একটা কাজ পাবেন তখন তারর সাথে যোগাযোগ করতে হয়।
আর সে কিন্তু আপনার সাথে বাংলায় কথা বলবে না। অবশ্যই সে আপনার সাথে ইংরেজিতে কথা বলবে।
আপনি যদি তার সাথে কথাই বলতে না পারেন তবে কিভাবে বুঝবেন যে আপনাকে কোন কাজটা করতে হবে বা সে আপনাকে দিয়ে কোন কাজটা করাবে।
তাই অবশ্যই আপনাকে কমিউনিশনে প্রো হতে হবে। মানে ইংরেজিতে ভালো দক্ষ হতে হবে। তবে আমি একটা কথা বলি ফ্রিল্যান্সিং আগের মতো সহজ নয়।
এমন নয় যে, আপনি একটা কম্পিউটার কিনলেন এবং সাথে সাথে ইন্টারনেট কানেক্ট করে মাসে লাখ টাকা আয় করবেন। এমন কিন্তু মোটেও নয়।
তবে আপনি চাইলে এমন কিছু কাজ করতে পারেন যেখান আপনার কোনো ফ্রিল্যান্সিং করতে হবে না। যেমন: ব্লগিং, এটা আমার থেকে বললাম।
সফল হতে কিছু টেকনিক
আমি আপনার পুরো ব্যাপারটা মেনেছি। যে, আপনার কম্পিউটার আছে এবং আপনার ইন্টানেটও আছে। পাশাপাশি আপনি কাজও জানেন। এরপরও আমি বলবো আপনার ঘাটতি রয়েছে।
আপনি কাজ জানার পরও কাজ পাবেন এর কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারবেন? মোটেও না।
আমি আগেই বলেছি যে, প্রতিযোগিতা। আপনার মতো হাজারো ফ্রিল্যান্সার বসে আছে কাজ পাওয়ার জন্য।
কাজগুলো পায় সাধারণত বিভিন্ন মার্কেকটপ্লেস থেকে। যেমন ফাইবার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ডট কম ইত্যাদি।
কাজ শেখার পরে আপনি যখন ফাইবারে একাউন্ট খুলবেন তখন আপনাকে কিছু টেকনিক অবলম্বন করতে হবে।
ফাইবারে কথা বলার কারণ হচ্ছে যারা ফ্রিল্যান্সিং জগতে নতুন তাদের জন্য ফাইবার সেরা হবে।
কারণ যারা হাই লেভেলের তারা বেশিদিন ফাইবারে কাজ করে না। এর কারণ হচ্ছে ফাইবারে ছোট ছোট কাজ পাওয়া যায় বা কাজগুলো ছোট।
এখন একাউন্ট খোলার পর ৫ স্টার পাওয়া প্রোফাইলগুলো ফলো করবেন। সহজ কথায় তাদের সকল এক্টিভিটি ফলো করবেন।
গিগ আপলোড করার সময় একটু রিসার্স করবেন। এবং সবসময় অনলাইনে বা ফাইবারে একটিভ থাকার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনার ব্যাপারে কিছু আশা করা যায়।
আবার আপনি আজকে ফ্রিল্যান্সিং জগতে এস আজকেই যে আয় করতে পারবেন এর কোনো নিশ্চয়তা কেউই দিতে পারবে না।
আপনাকে শুধু লেগে থাকতে হবে। এবং এর শেষ পর্যন্ত যেতে হবে। আশা করি আপনি সফল হবেন।
শেষ কথা:
আজকের ব্লগে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন এবং কোথায় থেকে শুরু করবেন তার গাইড করার চেষ্টা করেছি।
আশা করি আপনার উপকারে আসবে। আর আপনি সফল হন এই কামনা করি ধন্যবাদ!