যারা নতুন করে ওয়েবসাইট তৈরি করার কিংবা অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করে তারা ডোমেইন, হোস্টিং নাম শুনে থাকে। একেবারে নতুন অবস্থায় তারা ডোমেইন ও হোস্টিং এর মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে না।

মানে অনেকেই মনে করে ডোমেইন এবং হোস্টিং দুইটাই কি একসাথে প্রয়োজন কিনা? অথবা দুইটার কাজ ভিন্ন ভিন্ন নাকি একই?
বর্তমানে অনলাইন যতই প্রসারিত হচ্ছে এবং অনলাইনে কর্মসংস্থানের যতই প্রবনতা বাড়ছে ততই ডোমেইন এবং হোস্টিং এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব হচ্ছে।
আসলে একটা কথা বলতে মন চাইছে যদিও এই পোস্ট রিলেটেড না তারপরও বলছি। যেখানে উন্নত বিশ্বে অনলাইনে হাজার হাজার ইনকাম কোর্স রয়েছে সেখানে আমাদের দেশের মানুষ এখনও ডোমেইন এবং হোস্টিং এর পার্থক্য খুঁজছে।
যাইহোক! ডোমেইন ও হোস্টিং এর মধ্যে পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করার আগে আলোচনা করবো যে ডোমেইন এবং হোস্টিং ব্যাপারটি কি?
ডোমেইন কি?
আপনারা অনেকেই জানেন যে ডোমেইন এবং হোস্টিং দুটি আলাদা জিনিস। ডোমেইন এবং হোস্টিং দুইটি পৃথক হলেও এরা একে অপরকে ছাড়া অসম্পূর্ণ।
(Domain) ডোমেইন মানে হলো “ডোমেইন নেম”
এখানে নেম আছে মানে বুঝতেই পারছেন যে এটি একটি নাম। তবে এই নামটি ইন্টারনেটে ব্যবহার করা হয়।
এই নামগুলো হয়ে থাকে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের নাম। যেমন google.com একটা ওয়েবসাইট।
google.com হলো একটা ডোমেইন নেমম। আর শুধু .com হলো এক্সটেনশন।
তবে ডোমেইনের জন্য আপনারা এত কঠিন কোন থিওরি মাথায় নিবেন না।
সহজ করে বলতে গেলে একটা ওয়েবসাইটের যে নাম হয়ে থাকে এই নামকেই ডোমেইন নেম বলা হয়।
আপনি যখনই একটা ওয়েবসাইট তৈরি করার কথা চিন্তা করবেন তখন আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটা নাম নির্বাচন করতে হবে।
আপনি যে নামটি নির্বাচন করতে চান সে নামতেই হতে হবে সম্পূর্ণ ইউনিক।
এবং একটা ডোমেইন নেম একজন ব্যক্তি এক বছরের জন্য কিনতে পারবে। পরবর্তীতে যদি প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে নতুন করে রিনিউ করে নিতে হবে।
আর যখন কেউ একটা ডোমেইন এক বছরের জন্য কিনবে তখন সেই ডোমেইন একই সময়ে অন্য কেউ কিনতে পারবে না।
এখানে এক বছর বলার কারণ হচ্ছে একটা ডোমেইন কিনতে গেলে সর্বনিম্ন এক বছরের জন্য কিনতে হয়।
আর এই ডোমেইন গুলো বিক্রি করে বিভিন্ন ডোমেইন নেম প্রোভাইডার’রা।
দেশ-বিদেশে এরকম অসংখ্য প্রোভাইডার রয়েছে।
হোস্টিং কি?
হোস্টিং মূলত একটা সার্ভার। যেখানে ওয়েবসাইটের টেক্সট, ফটো, মিডিয়া সহ পুরো সাইট হোস্ট করে রাখা যায়।
এখন অনেকে বলতে পারেন যে আমার ওয়েবসাইট আমি আমার কম্পিউটারে হোস্ট করে রাখতে পারব কিনা?
এর উত্তর হচ্ছে রাখা সম্ভব হলেও সম্ভব না।
আমি আপনাকে একটু বুঝিয়ে বলছি।
আপনি যখন আপনার কম্পিউটারটিকে সার্ভার বানাতে চাইবেন তখন আপনার কম্পিউটারে সার্বক্ষণিক অনলাইনে বা চালু রাখতে হবে।
অনলাইনে বা চালু রাখার কারণ হচ্ছে যখনই আপনার সাইটে কেউ ভিজিট করবে তখন সে আপনার সাইটের টেক্সট, ইমেজ, মিডিয়া সহ ওয়েবপেজের কোডগুলোকে ব্রাউজারে রান করা।
তবে এই হোস্টিং সার্ভারগুলো অনেক ধরনের হতে পারে।
যেমনঃ শেয়ারড হোস্টিং, ভিপিএস হোস্টিং, ক্লাউড হোস্টিং ইত্যাদি।
এই হোস্টিংয়ের ধরন গুলো নিয়ে অন্য একটি পোস্টে আলোচনা করেছি।
ডোমেইন এবং হোস্টিং এর সম্পর্ক
(Domain name) ডোমেইন নেম কি, হোস্টিং কি এবং ডোমেইনের কাজ কি, হোস্টিং এর কাজ কি সে সম্পর্কে সাধারণ ভাবে জেনে গেছেন এতক্ষনে।
এবার জানার চেষ্টা করব ডোমেইন এবং হোস্টিং এর মধ্যে সম্পর্ক কি? এবং কেন এরা একে অপরের পরিপূরক।
আপনি যখন আপনার ওয়েবসাইটটিকে সার্ভারে আপলোড করবেন তখন সেই সার্ভারটিকে আপনার ওয়েবসাইটের নামের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
তবেই একজন ইউজার আপনার সাইটে প্রবেশ করতে চাইলে আপনার ডোমেইনে আপলোড করা ওয়েবসাইটটি খুঁজে পাবে।
যদি আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে হোস্টিং সার্ভারে আপলোড করলেন কিন্তু সার্ভারের সাথে ডোমেইন নেমটি সংযুক্ত করলেন না তাহলে ইউজার’রা ডোমেইন নেম সার্চ করেও কোনো ফাইল পাবে না।
কারণ আপনি তো আপনার ডোমেইনের সাতে কোনো সার্ভারই কানেক্ট করেন নাই।
এজন্য আপনার শুধুমাত্র হোস্টিং সার্ভার থাকলেও আপনি সেটাকে বিশেষ কোন কাজে লাগাতে পারবেন না।
আবার শুধুমাত্র ডোমেইন নেম থাকলেও ইউজাররা সে ডোমেইন সার্চ করেও কোন ফাইল বা আপনার ওয়েবসাইট পাবে না।
আশা করি ডোমেইন এবং হোস্টিং এর যে সম্পর্ক সেটা বুঝতে পেরেছেন।
ডোমেইন ও হোস্টিং এর মধ্যে পার্থক্য
ডোমেইন এবং হোস্টিং দুটি পৃথক জিনিস হলেও একে অপরকে ছাড়া চলতে পারে না।
কিংবা এই দুটি একত্র না হলে একটি কাজ সম্পাদিত হবে না।
ডোমেইন ও হোস্টিং এর মধ্যে পার্থক্য দেখে নিনঃ
১. ডোমেইন হলো একটি নাম। যেটার দ্বারা কোনো ওয়েবসাইটে ভিজিট করা যায়।
১. হোস্টিং হলো একটি সার্ভার। যেখানে ওয়েবসাইটের যাবতীয় ফাইল রাখা হয়। যাতে করে কোনো ইউজার সেই ফাইলগুলো দেখতে পারে।
২. একটি ডোমেইন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মাত্র একবারই ক্রয় করা যায়।
২. প্রতিটা হোস্টিং এর আলাদা আলাদা প্যাকেজ থাকে। যার ফলে যেকেউ যখন তখন হোস্টিং সার্ভার কিনতে পারে।
৩. ডোমেইন নেম এর অনেকগুলো এক্সটেনশন থাকে। যেমন .com .org .net .info .xyz ইত্যাদি।
৩. হোস্টিং সার্ভার অনেক ধরনের হতে পারে। যেমন শেয়ারড হোস্টিং, ভিপিএস হোস্টিং, ক্লাউড হোস্টিং ইত্যাদি।
ডোমেইন ও হোস্টিং কিনতে চাইলে
ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্র থেকে শুরু করে অনলাইনে বিভিন্ন প্রজেক্ট করার জন্য ডোমেইন এবং হোস্টিং এর প্রয়োজন হয়।
সেক্ষেত্রে দেশি এবং বিদেশি এমন অসংখ্য অপারেটর রয়েছে যারা ডোমেইন এবং হোস্টিং বিক্রি করে থাকে।
যদি ছোটখাটো কোন কাজের ক্ষেত্রে ডোমেইন এবং হোস্টিং ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনি দেশীয় কোম্পানি থেকে নিতে পারেন।
আর যদি কোন বড় প্রজেক্ট করার পরিকল্পনা থাকে সেক্ষেত্রে ভালো মানের সার্ভার এবং বিদেশি কোম্পানি থেকে হোস্টিং কেনার চেষ্টা করবেন।
তবে ডোমেইন এর ক্ষেত্রে দেশি কিংবা বিদেশী যেকোনো একটা হলেই হবে।
FAQ – ডোমেইন ও হোস্টিং এর মধ্যে পার্থক্য
ডোমেইন হলো একটি ইউনিক নাম যেটা দিয়ে একটি ওয়েবসাইটের আইডেন্টি বোঝানো হয়। হোস্টিং হলো একটি সার্ভার যেখানে সমস্ত ফাইল সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
না, ডোমেইন নাম একটি ওয়েবসাইটের নাম হতে পারে। কিন্তু হোস্ট নাম শুধুমাত্র সার্ভার প্যাকেজ এর নাম হতে পারে।
শেষ কথাঃ
যারা নতুন অবস্থায় ডোমেইন এবং হোস্টিং এর নাম শুনে থাকেন তারা ডোমেইন ও হোস্টিং এর মধ্যে পার্থক্য জেনে নিবেন।
তাহলে অনলাইনে প্রজেক্ট এর ক্ষেত্রে ডোমেইন এবং হোস্টিং এর ব্যবহার করতে পারবেন।

Hello, I am Mehedi. You can call me (Hasan N). and on this site, I share informative and tech-related articles. Explore more on my site.