বর্তমানে টিকটক এলগরিদম একটু পরিবর্তন হয়েছে। আর টিকটক তাদের এলগরিদমে কি কি পরিবর্তন এনেছে, এবং এই এলগরিদম মেনে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার উপায় সমূহ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

তাই আজকে জানতে পারবেন টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার উপায় গুলো।
টিকটক একাউন্ট খোলা একেবারেই সহজ। দেখা যায় ভিডিও করা কিন্তু কঠিন। আবার ভিডিও ভাইরাল করতেও অনেক কষ্ট হয়।
সব মিলিয়ে কিছু দিন টিকটক করার পর ছোট খাটো টিকটকাররা টিকটক করা ছেড়ে দেয়।
এটা খুবই হতাশা জনক। কিন্তু ধৈর্য লাগবেই। এবং সেই সাথে আজকের আর্টিকেলটিও পড়ে নিন। আজকের আর্টিকেলে থাকছে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার উপায় গুলো।
এবং কিছু দরকারি টিপ্স এন্ড ট্রিকস। যেগুলোতে আপনার ভিডিও ভাইরাল হবার একটা সম্ভাবনা থাকে।
শুরুতেই বলে নিই যে, আপনি যদি ব্লগটি পড়েন এবং যেরকম বলবো সেরকম করেন তবে, এর মানে এই না যে ভিডিও এখনই ভাইরাল হবে।
ভিডিওগুলো ভাইরাল হতে কিছু সময় লাগবে।
যারা বলে সাথে সাথে ভিডিও ভাইরাল হয়, আমি বলবো তারা আপনাকে সঠিক তথ্য দেয়নি। আপনি একটু ধৈর্য ধরুন। সবকিছু জানতে পারবেন।
টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার উপায়
আপনি যদি টিকটক ভিডিও ভাইরাল করতে চান তবে, সবার আগে প্রয়োজন একটি প্রফেশনাল টিকটক একাউন্ট। তাই আমি আগেই প্রফেশনাল টিকটক আইডি খোলার নিয়ম সম্পর্কে বলেছি।
সেখানে আমি বলেছি যে, টিকটক আইডি প্রফেশনাল হলে কি কি সুবিধা। এবং ভিডিও ভাইরাল হবার সম্ভাবনা কতটুকু। তাই আগে সেই আর্টিকেলটি পড়ে নিন।
১. ফ্রেশ এবং ইউনিক ভিডিও তৈরি করা
আপনি হয়তোবা খেয়াল করলে দেখবেন যে আপনার for you পেইজেতে যতগুলো ভিডিও দেখতে পাচ্ছেন এর সবগুলো ভিডিও কোয়ালিটি পুরো ফ্রেশ।
এবং প্রতিটা ভিডিও অনেক ভালো করে এডিট করা। আপনি কখনো এটা দেখবেন না যে এমন কিছু ভিডিও আপনার সামনে আসছে যেগুলোর কোন কোয়ালিটি নেই।
এমনকি এমন কোন ভিডিও আপনার সামনে আসবে না যেগুলো ক্যামেরা কোয়ালিটি ভালো নয় কিংবা কনটেন্ট কোয়ালিটিও ভালো নয়।
তাই বলা যায় টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে ফ্রেশ এবং ইউনিক কনটেন্ট তৈরি করা।
তবে আজকে আপনাদের পার্টে পার্টে বুঝাবো। কি কারনে ভিডিও ভাইরাল হয় এবং কি কারনে ভিডিও ভাইরাল হয় না। আর টিকটক আইডি ফিউজ হয় কেনো।
- টাইমিং
- ভিডিও আপলোডিং
- শেয়ারিং
- লাইক
২. ভিডিও আপলোড করার টাইমিং
টাইমিং বলতে আপনার কাজকে সময়ের মধ্যে ভাগ করে নিবেন। আমি একটু বুঝিয়ে বলি। আপনি সারা দিরে ভিডিও আপলোড করেন তিনটা (৩) টা।
এখন আপনাকে এটা বুঝতে হবে যে, কখন টিকটকে বেশি ভিউ হয়। বা কখন মানুষ টিকটকে বেশি সময় দেয়।
আপনার আইডিতে যদি আগের কোনো ভিডিও আপলোড করে থাকেন তবে, সেই ভিডিওটি একটু দেখুন। কখন বেশি ভিউ হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, আপনার ভিডিও বিকাল ৪টায় বেশি ভিউ হয়। এখন আপনি যদি ভিডিও আপলোড করেন তবে, বিকাল ৪টার মধ্যে আপলোড করবেন।
এতে করে আপনার ভিডিওতে বেশি ভিউ হবার সম্ভাবনা থাকবে। এবং দেখা যাবে যে, সেই ভিউ গুলো থেকে আস্তে আস্তে লাইক পাবার সম্ভাবনা আছে।
এখন আপনার প্রশ্ন থাকতে পারে যে, আমি নতুন আইডি খুলেছি। তাহলে আমি কি করে জানবো কখন বেশি ভিউ হয়?
আপনার কথায় অবশ্যই যুক্তি আছে। তাই আপনার জন্য সাজেশন থাকবে যে, আপনি রিসার্চ করার জন্য প্রথমে দুই একটা ভিডিও আপলোড করুন।
তারপর দেখেন কখন বেশি ভিউ হয় এবং কখন কম ভিউ হয়।
আর এই পদ্ধতিটি টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার উপায় বলতে পারেন। তবে একদিনে ভিডিও ভাইরাল হবে না।
এভাবে এক দেড় মাস ভিডিও আপলোড করে যান তবেই বুঝতে পারবেন।
৩. প্রফেশনালভাবে ভিডিও আপলোড করুন
বর্তমানে নতুন টিকটক ইউজারদের একটা সমস্যা আছে। তারা ভিডিও আপলোডিং এর ব্যাপারটা বুঝতে পারে না। যার কারনে রেগুলার ভিডিও আপলোড করতে পারে না।
ভিডিও আপলোডিং এর ব্যাপারটা একটু বলি। ধরুন আপনি রেগুলার ভিডিও আপলোড করেন। কিন্তু আপনি কোনো নিয়ম ফলো করেন না।
ভিডিওও আপলোডের একটা নিয়ম করে নিবেন। নিয়মটা হলো: আজকে আপনি ২ টা ভিডিও টিকটকে আপলোড করেছেন। বা দুইটা ভিডিও আজকে বানালেন এবং আপলোড করলেন।
দেখা যায় আগামীকাল আর ভিডিও তৈরি করতে পারলেন না। তাহলেতো হবে না। এরকম হলে আপনার প্রোফাইলে মাইনাস হবে।
তাই একটা নিয়ম করবেন। যেমন আপনি প্রত্যেকদিন ভিডিও করতে পারেন না। বা ভিডিও করার সময় হয়ে ওঠে না।
তখন আপনি একদিনে যতগুলো ভিডিও বানাবেন তার সবগুলো আপলোড করবেন না।
যদি আপলোড করেন তবে, আগামীকাল আর কোনো ভিডিও থাকবেনা আপলোড করার জন্য।
তাই প্রতিদিন যাই ভিডিও তৈরি করেন না কেনো মনে রাখবেন যে, এভারেজ ভিডিও আপলোড করবেন। যেমন প্রতিদিন দুইটা করে
তাহলে আপনি টিকটকে রেগুলার ভিডিও আপলোড করতে পারবেন। এবং রেগুলার হলে আপনার আইডি ফিউজ হবারও কোনো সম্ভাবনাই থাকবে না।
৪. লাইক এবং শেয়ারিং এর মাধ্যমে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করুন
লাইক এবং শেয়ারিং এর ব্যাপারটা একবারেই বুঝাবো। একটা ভিডিও আপলোডের পরই অনেকে শেয়ার করে।
অবশ্যই শেয়ার করবেন। তবে আপনারা একটু ছোট ভূল করেন। যার ফলে আইডি ফিউজ হয়ে যায়।
ধরুন আপনি ভিডিও আপলোড করেছেন। এবং আমি দেখেছি যে, অনেকেই অন্যের মোবাইলে গিয়ে তাদের আইডি থেকে নিজের ভিডিওটা শেয়ার করে।
এটা একদমই করবেন না।
মানে আপনার ভিডিও অনের আইডি বা মোবাইল থেকে শেয়ার করেন। এটাতে কিন্তু আপনারই ক্ষতি। আপনার আইডি থেকে আপনি একটি শেয়ার দিবেন।
দেখা যায় যে, অনেকে আবার ফেক আইডি থেকেও শেয়ার দেয়। তাহলে আপনাকে বলি আপনি যদি এরকম করে থাকেন।
তবে, আমি নিশ্চিত আপনার আইডি ফিউজ হয়ে যাবে। কিভাবে এই প্রক্রিয়াটি হয় আপনাদেরকে একটু বুঝিয়ে বলি।
যখন আপনি ভিডিওটি অন্যান্য মোবাইল থেকে আপনি নিজেই শেয়ার দেন তখন, আপনার ভিডিওর শেয়ারটি যোগ হবে। বা প্লাস হবে।
কিন্তু আপনি আজকে শেয়ার দিলেন ৩টা (উদাহরণস্বরূপ) কিন্তু আপনার আইডিতে প্লাস পয়েন্ট পাবার জন্য আগামীকাল ৪ট প্লাস করতে হবে।
মানে আগামীকাল আপনাকে যেকোনো ৪টি মোবাইল থেকে ভিডিও শেয়ার দিতে হবে। এভাবেই করতে হবে।
কিন্তু আপনি তো আর রেগুলার এভাবে কারো মোবাইল পাবেন না। ফলে আপনার ভিডিওতে প্লাস করতে না পারলে মাইনাস হবে।
আর মাইনাস হলেই আইডি ফিউজ। আশা করি লাইক এবং শেয়ারিং ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন। কখনোই এমনটি করবেন না।
৫. ট্রেন্ড ফলো করে ভিডিও বানানো
বর্তমানে খুব অল্প সময় টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার উপায় গুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে ট্রেন্ড ফলো করে টিকটক ভিডিও বানানো।
কারণ এখনকার সময়ে যত ট্রেন্ড হয় সবগুলো সোশ্যাল নেটওয়ার্ক থেকে ট্রেন্ড হয়ে থাকে। যেমন কিছু ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হতে দেখা যায়।
আবার কিছু ভিডিও বা গান ইউটিউবে ভাইরাল হয়ে সেগুলো টিকটকে যায় এবং পরবর্তীতে ফেসবুকে যায়।
তাই কখন কি ট্রেন্ড হচ্ছে তা নজর রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং এটা মনে রাখবেন আপনি যখন ট্রেন্ড ফলো করবেন তখন ট্রেন্ড মিউজিক গুলোর দিকে বেশি নজর দিবেন।
এটার কারণ হচ্ছে ট্রেন্ড মিউজিক এবং ট্রেন্ড লিরিক্স এর মাধ্যমে যেমন ভিডিও বানানোর সহজ হয় তেমনি ভিডিও ভাইরাল করা ও খুব সহজ।
৬. সেলিব্রেটিদের সাথে আপডেট থাকা
বর্তমান সময় বেশিরভাগই ক্ষেত্রে বিভিন্ন সেলিব্রেটিরা তাদের বয়স এবং ক্লিপগুলো ভাইরাল করে থাকে।
এটার বেশি প্রবণতা দেখা যায় তৌহিদ আফ্রিদির ক্ষেত্রে। কারণ সে কয়েক দিন পর পর কিছু কিছু শায়েরী এবং লিরিক্স করে থাকে যেগুলো খুবই হিট হয়ে থাকে।
তাই আপনি তাদের সেই ভয়েস গুলোর মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। এবং যেমনটা বলেছি এই ভিডিওগুলো সব সময় ট্রেন্ডে থাকবে।
৭ ভাইরাল মিউজিকের সাথে ভিডিও তৈরি করুন
বর্তমান সময়ে যেকোন মিউজিক রিলিজ হওয়ার পর সেগুলোর ছোট ছোট ক্লিপ অনেক সুন্দর হয়ে থাকে।
এবং দেখা যায় অনেকেই সেই ছোট ছোট গানের ক্লিপগুলো দিয়ে ভিডিও তৈরি করে।
সে সাথে আপনিও যদি ভাইরাল মিউজিকের সাথে ভিডিও তৈরি করেন তাহলে সহজে ভাইরাল হতে পারবেন।
আর সব সময় মনে রাখবেন ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক যেটা দিয়ে ভিডিও তৈরি করবেন সেটা অবশ্যই অরজিনাল গায়কের বা অরজিনাল আইডির রেফারেন্স দিবেন।
এটাতে একটা সুবিধা রয়েছে সেটা হল আমরা যখন কোন ট্রেন্ড মিউজিক দেখি তখন সেই মিউজিকের অরজিনাল ভার্সনটি খুজে থাকি।
তাই আপনি যদি অরজিনাল মিউজিক এর সাথে ভিডিও তৈরি করেন তাহলে কেউ যখন সে অরজিনাল মিউজিকটি খুঁজতে যাবে তখন আপনার ভিডিওটি তার সামনে যাবে।
এভাবেই সহজেই ভাইরাল মিউজিকের সাথে ভিডিও তৈরি করে ভাইরাল হতে পারবেন।
অল্প সময়ে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার উপায়
আপনি যদি অল্প সময়ে আপনার টিকটক ভিডিওটি for you page এ নিতে চান তাহলে আপনাকে দুইটি টিপস ফলো করতে হবে।
প্রথমত, ট্রেন্ডিং এর সাথে ভিডিও করা। টিকটকে যখন যে ট্রেন্ড হবে সেই ট্রেন্ডের সাথে ভিডিও করে তা আপলোড করলে বেশি ভিউ পাবেন।
আর যখন আপনার ভিডিওটি বেশি ভিউ হতে থাকবে তখন বুঝে নিবেন যে আপনার ভিডিওটি fory ou page এ র্যাংক হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, ভালো মানের ভিডিও এডিটিং করা। আমাকে যদি কেউ বলে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার উপায় কি? কি?
তখন আমি বলি যে ভালো মানের ভিডিও এডিট করা। কারণ কনটেন্ট কোয়ালিটি ভালো না হলে তা কখনো ভাইরাল হবে না।
সেজন্য আপনি যদি টিকটক ভিডিওগুলো ভালো মানের করতে চান তবে টিকটক ভিডিও বানানোর সফটওয়্যার সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
যে সফটওয়্যারগুলোর মাধ্যমে আপনি হাই কোয়ালিটির ভিডিও এডিট করতে পারবেন। নিচে লিংক দিয়ে দিয়েছি।
আর আমি খুব শীগ্রই আরেকটি আর্টিকেল আপলোড করবো। যেটাতে দেখাবো কিভাবে প্রফেশনালভাবে ভিডিও আপলোড করা যায়। যেমন #ট্যাগ, ক্যাপশন, ভিডিও কোয়ালিটি ইত্যাদি। তাই সাথেই থাকুন।
শেষ কথা:
আপনি যদি অল্প সময়ে tiktok এ ভাইরাল হতে চান তাহলে টিক টক ভিডিও ভাইরাল করার উপায় গুলো দেখে নিন।
যেগুলোর মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার tiktok ভিডিও ভাইরাল করতে পারবেন। এবং আপনি সহজেই সেলিব্রেটি হতে পারবেন।
আর ভিডিও কখনোই একদিনে ভাইরাল হয় না। আপনার পাশের কেউ যদি ভিডিও ভাইরাল করতে পেরেছে তাকে জিজ্ঞেস করবেন। সেও বলবে একদিনে ভিডিও ভাইরাল হয় না। ধন্যবাদ!