বর্তমান সময় মানুষের হাতে যথেষ্ট পরিমাণ সঞ্চয় থাকে। এবং তাদের প্রত্যেকের চিন্তাধারায় ইনভেস্ট করে টাকা ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে রিসার্চ করা।
কারণ কিছু বলছো আগেও মানুষের মধ্যে তো প্রচলিত ধারণা ছিল সেটা হচ্ছে সঞ্চয়কৃত টাকা ব্যাংকে জমা রাখা।
কিন্তু এখনকার সময়ের ব্যবধানে মানুষজন সঞ্চয়কৃত টাকা ইনভেস্ট করতে খুবই আগ্রহী।
কিন্তু একটা কথা আছে,
সেটা হল কোথায় টাকা ইনভেস্ট করবে কিভাবে ইনভেস্ট করব অথবা কোন উপায় ইনভেস্ট করলে প্রফিট আসবে এগুলো সম্পর্কে তেমন একটা রিসার্চ করে না।
ধরুন আপনার হাতে দশ হাজার টাকা সঞ্চয় আছে। এখন হয়তো অমুক বলছে টাকা ব্যাংকে রাখতে।
আবার অন্য আরেকজন বলছে টাকা শেয়ার বাজার বিনিয়োগ করতে।
অথবা কেউ কেউ বলে থাকে টাকাগুলো এনজিও তে ফিক্সড ডিপোজিট রাখতে।
কিন্তু এখন আপনার যদি এই ব্যাপার গুলো সম্পর্কে ধারণা না থাকে তাহলে তো আপনি আপনার নিকটস্থ কারো কথা ধরে হয়তো টাকাটা কোথাও রাখবেন।
পরবর্তীতে দেখা যাবে হয়তো ওই টাকা থেকে আপনার প্রত্যাশিত প্রফিট আসছে না।
আবার অনেকে চায় ইনভেস্ট করে টাকা ইনকাম করতে।
মানে সে নির্দিষ্ট একটা পরিমাণ টাকা ইনভেস্ট করবে এবং সেই ইনভেস্টের থেকে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ আসবে।
এখানে কথা হচ্ছে দুইটা, প্রথমত ফিক্সড ইনভেস্ট বা ডিপোজিট।
মানে আপনি একবারে টাকা জমা রাখবেন এবং একবারে টাকা উত্তোলন করবেন তবে একই সাথে প্রফিটসহ উত্তোলন করবেন।
আর দ্বিতীয় যে ব্যাপার সেটা হচ্ছে আপনি নির্দিষ্ট একটা এমাউন্ট ইনভেস্ট করবেন তবে সেই ইনভেস্ট থেকে আলাদা আলাদা লভ্যাংশ গ্রহণ করবেন।

তাহলে চলুন আজকে আপনাদের সাথে ইনভেস্ট করে টাকা ইনকাম করা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
ইনভেস্ট মানে কি?
ইনভেস্ট একটি ইংরেজি শব্দ। এর বাংলা অর্থ হচ্ছে বিনিয়োগ করা।
তবে আমাদের দেশের সচরাচর একটা ধারণা সেটা হচ্ছে ইনভেস্ট মানেই টাকা পয়সা বিনিয়োগ করা।
শব্দের অর্থ হিসেবে ইনভেস্ট মানে বিনিয়োগ হলে তাহলে টাকা পয়সা বিনিয়োগ করা মানে বিনিয়োগ বলা হয়।
এক্ষেত্রে ইনভেস্ট কিন্তু শুধুমাত্র টাকা-পয়সা বিনিয়োগ না।
ইনভেস্ট হতে পারে আপনার সময় বিনিয়োগ করা।
কিংবা আবার ইনভেস্ট হতে পারে আপনার শ্রম বিনিয়োগ করা।
ঠিক একই ভাবে বলা যায় ইনভেস্ট মানে মেধা বিনিয়োগ করা।
যেহেতু সংজ্ঞা দিতে গেলে টপিক ভিন্ন হয়ে যায় তাই আজকে শুধুমাত্র অর্থের বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করব।
মানে আপনার কাছে যদি কিছু টাকা থাকে তাহলে আপনি কোথায় বিনিয়োগ করলে কী পরিমাণ লাভবান হবেন সে ব্যাপারে আলোচনা করব।
বর্তমানে অনেকে বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে থাকে যেগুলোকে আমরা ইনভেস্ট নামে বুঝি।
তবে শুধুমাত্র কোম্পানিতে বি নিয়োগ করায় ইনভেস্ট নয়।
ইনভেস্টমেন্ট এর অনেক ধরন আছে। তবে আছে কিছু প্রকার ইনভেস্টমেন্ট আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব।
এবং আপনাদেরকে বেসিক ইনভেস্ট শিখিয়ে দিব যাতে করে আপনারা ইনভেস্ট করে টাকা ইনকাম করতে পারেন।
ইনভেস্ট এর প্রকারভেদ
প্রথমে আপনাদের সাথে আলোচনা করব ইনভেস্টমেন্ট এর প্রকারভেদ সম্পর্কে।
আপনারা যখন জানতে পারবেন যে ইনভেস্ট কত প্রকার তখন আপনারাই বুঝতে পারবেন যে আপনারা কত প্রকার ভাবে ইনভেস্ট করে টাকা ইনকাম করতে পারেন।
- মিউচুয়াল ফান্ড
- রিয়েল এস্টেট
- বন্ড
- স্টক
- রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট
- এক্সচেঞ্চ ট্রেডেড ট্রাস্ট
- ট্রেড
- পণ্য
- অপশন
- ক্রিপ্ট কারেন্সি
- অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট
- ইনডেক্স ফান্ড
- মানি মার্কেট ফান্ড
- সিকিউরিটি
- ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি
- নগদ এবং নগদ সমতুল্য
- ফিক্সড ইনকাম
এভাবে আরো অনেক প্রকারের ইনভেস্টমেন্ট রয়েছে।
সবগুলো তথ্য এখানে দেখুনঃ Google source
আপনি যদি ইনভেস্ট করে টাকা আয় করতে চান তাহলে আপনার কাছে এই সকল অপশন রয়েছে।
অর্থাৎ ইনভেস্টদের শুধুমাত্র শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ, এমনটা নয়।
এখানে ইনভেস্টের আরো একটা ধরন আছে।
সেটা হলো নিজের উপর বিনিয়োগ করা।
নিজের উপর সময়. শ্রম. মেধা ইত্যাদি বিনিয়োগ করে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলা।
তাই আপনি বুঝতে পারছেন যে আজকে আমাদের টপিক দুই দিকে যাবে।
ইনভেস্ট করে টাকা ইনকাম করার উপায়
ইনভেস্ট করে টাকা ইনকাম করার এমন অনেক উপায় রয়েছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে কোন কোম্পানিতে কিংবা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা।
তবে আপনাদেরকে একটা কথা সবসময় মাথায় রাখতে হবে, সেটা হলো শেয়ার বাজার সব সময় অনিশ্চিত।
এমন অনেক এক্সপার্ট আছেন যারা শেয়ারবাজার সম্পর্কে সবকিছু জেনে বুঝে ইনভেস্ট করার পরেও প্রায় নিঃস্ব হয়ে যায়।
আবার যাদের লাক (ভাগ্য) অনেক ভালো তারা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যায়।
অন্যদিকে দেখা যায় অনেকে সেলফ ডিপেন্ডেন্ট স্কিলস এর উপর বিনিয়োগ করে।
তাই এখানে আপনার জন্য দুটি পথ উন্মুক্ত হয়েছে।
প্রথমতঃ সকল ঝুঁকি এবং মুনাফার সম্ভাবনা জেনে শেয়ার বাজারের নিয়োগ করা।
দ্বিতীয়তঃ self defended কোন স্কিল এর উপর বিনিয়োগ করে লাভবান হওয়া।
এখানে আপনাদেরকে একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়ে রাখি সেটা হল আপনি যদি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেন তবে কোম্পানির লাভ লোকসানের উপর আপনার লাভ লোকসান নির্ভর করবে।
তেমনি আপনি যদি নিজের কোন স্কিলস এর ওপর বিনিয়োগ করেন তাহলে ওই স্কিলসকে কাজে লাগিয়ে নিজের লাভ লোকসান হিসাব বের করা।
তার মানে এই না যে আপনি ringid এর মত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইনভেস্ট করবেন এবং ধরা খাবেন।
আমি আপনাকে কখনো এমনটা করতে বলবো না।
স্কিল অর্জন বনাম শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট করে টাকা ইনকাম
আপনি কখন শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করবেন?
অবশ্যই যখন আপনার হাতে সেভিংস থাকবে এবং শেয়ার বাজার সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞ্যান থাকবে।
আর কখন আপনি আপনার স্কিল অর্জনের পেছনে ইনভেস্ট করবেন?
যখন আপনার ক্যারিয়ার গড়ার বয়স।
আপনাকে জীবনে কিছু একটা করতেই হবে কিংবা আপনার কর্মের সময় হয়েছে এমন সময়ে এসে আপনার স্কিল অর্জনের জন্য বিনিয়োগ করা।
তবে আমি দেখতে পাচ্ছি যে যারা এই মুহূর্তে আমার এই পোস্টটি পড়ছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগ লোক রয়েছে যাদের এখন স্কিল অর্জন করার জন্য ইনভেস্ট করা প্রয়োজন।
তাই আপনি বিভিন্ন স্ক্যামে আপনার অর্জিত টাকা এভাবে নষ্ট হতে দিয়েন না।
আপনি কোন কাজ শিখতে পারেন।
আপনি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে সব কিছু জানতে পারেন।
অথবা কিভাবে অনলাইনে ইনকাম করতে হয় আপনি সে ব্যাপারে জানতে পারেন।
আর যদি আপনার আইকিউ ভালো হয় মানে আপনি যদি কোন কিছুর সহজে বুঝতে পারেন তাহলে আপনি ফরেক্স ট্রেডিং নিয়ে রিসার্চ করতে পারেন।
যদি আসলেও আপনার হাতে অনেক টাকা থাকে এবং আপনি ইনভেস্ট করতে চাচ্ছেন তাহলে আপনার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের আইডিয়াগুলো সবচেয়ে কার্যকরী হবে।
কারণ আমরা সবাই জানি ব্যবসার উপরে তেমন কিছুই নেই।
তাই আপনি যদি একটা ভালো ব্যবসা শুরু করতে পারেন তাহলে আপনার জন্য অবশ্যই এটা ভালো দিক হবে।
স্কিল এর পেছনে ইনভেস্ট করা কতটা যুক্তিযুক্ত?
আপনি যদি কখনো ভেবে থাকেন যে আপনি যেকোনো একটা স্কিল এর উপর ইনভেস্ট করবেন ওই স্কিলটা অর্জন করবেন এবং ওই স্কিলটা কাজে লাগিয়ে ইনকাম করবেন তাহলে স্কিল এর উপরে ইনভেস্ট করা কতটা যুক্তিযুক্ত সেটা আপনি আমার চেয়েও ভালো বুঝবেন।
বর্তমান সময় মানুষজন একের অধিক উপায়ে ইনকাম করা যাচ্ছে।
কারণ কেউ মুদ্রা স্মৃতির সাথে লড়াই করছে কিংবা কেউ কারো সেভিং বাড়াচ্ছে।
সোজা কথা যে যেভাবে যত টাকা উপার্জন করেছে তা তত টাকায় সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।
তাই মানুষজন এখন মাল্টি সোর্স থেকে ইনকাম করা যাচ্ছে।
এখন তারা যে সোর্সগুলো তৈরি করেছে কিংবা সোর্সগুলো তাদের আয়ত্তে এনেছে এক্ষেত্রে তারা তাদের এই স্কিল গুলোর উপরে অনেক সময় দিয়েছে।
অথবা অনেক ইনভেস্ট করেছে।
তাই আমি শুধুমাত্র একজন লেখক হিসেবে আপনাকে বলতে পারি স্কিল এর পেছনে ইনভেস্ট করার বিকল্প কোন কিছুই নেই।
কোন কোন স্কিল এর ওপর ইনভেস্ট করে টাকা ইনকাম করা যাবে?

বর্তমান সময়ে অনেকেই তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবছেন। সেক্ষেত্রে অনেকেই অনেক স্কিল অর্জনের পেছনে ছুটছেন।
তবে এখনো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে অধিকাংশ মানুষজন তাদের স্কিল গুলো অনলাইনে ডেভেলপ করছে।
এবং তারা যে স্কিল গুলো অর্জন করছে সেগুলো অনলাইন ভিত্তিক।
তাই আপনি অনলাইন ভিত্তিক যে কোন স্কিল সহজেই অর্জন করতে পারবেন।
তবে বর্তমানে অধিকাংশ মানুষজন ফ্রিল্যান্সিং শিখলেও আমি আপনাকে কনটেন্ট ক্রিয়েশন এর দিকে মনোযোগ দিতে বলব।
কারণ কনটেন্ট ক্রিয়েশন এমন একটা স্কিল যেটাতে আপনি পার্ট টাইম কিংবা ফুল টাইম যখনই সময় দেন না কেন আপনার রেজাল্ট কিন্তু খুব ভালো আসবে।
বর্তমানে কনটেন্ট ক্রিকেটারদের ডিমান্ড অনেক হাই এবং তাদের কাজের মূল্য ও অনেক বেশি।
কন্টেন্ট ক্রিয়েশনে রয়েছে মাল্টি সোর্স ইনকাম।
যেমন আপনি একটা ভিডিও তৈরি করলে সেই ভিডিও বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আপলোড দিতে পারবেন।
সেক্ষেত্রে রয়েছে ইউটিউব, ফেসবুক, টিকটক সহ অনেক স্যোশাল মিডিয়া।
তাই ভিন্ন প্লাটফর্ম গুলো থেকে আলাদা আলাদা করে ইনকাম আসা শুরু করবে।
সেজন্য আমি আবারও বলবো আপনি যে স্কিল অর্জন করতে চাচ্ছেন তার মধ্যে কনটেন্ট ক্রিয়েশনকে সবার উপরে রাখেন।
স্কিলগুলো অর্জন করতে কি পরিমান টাকা খরচ হবে?
অনেস্টলি আপনি যদি বিভিন্ন ইনভেস্ট না করে আপনার স্কিল অর্জনে ইনভেস্ট করতে চান এটা হবে আপনার জন্য সেরা সিদ্ধান্ত।
আপনার কেমন খরচ হতে পারে কিংবা কত টাকা খরচ হতে পারে সেটা একটা বেসিক ধারণা দিচ্ছি।
আমি আপনি যদি অনলাইন রিলেটেড কোন স্কিল অর্জন করতে চান আপনার সর্বপ্রথম লাগবে একটা কম্পিউটার।
এরপর রয়েছে কাজের বিভিন্ন ক্যাটাগরি। যেমন কনটেন্ট ক্রিয়েশন করতে চাইলে আপনার একটা স্টুডিও সেটআপ লাগবে।
অথবা আমার মত ব্লগিং করতে করতে চাইলে একটা ওয়েবসাইট লাগবে।
এভাবে আপনি যে স্কিলটি অর্জন করতে চান ওই স্কিল সম্পর্কে গুগলে সার্চ দিয়ে দেখেন।
কারণ বর্তমানে গুগলে এবং youtube এ অনেক ফ্রী রিসোর্স হয়েছে যেগুলো দিয়ে যেকোনো স্কিল অর্জন করা সম্ভব।
FAQ – ইনভেস্ট করে টাকা ইনকাম
আপনি যদি সঠিক এবং রিয়েল ভাবে ইনভেস্ট করতে চান তাহলে আপনি ট্রেড করতে পারেন আপনি যদি ট্রেডিং এ অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ফরেক্স ট্রেডিং করতে পারেন। ট্রেডিং সম্পর্কে বিস্তারিত গাইড লাইন আমাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে।
শেষ কথাঃ
আমাদের দেশের সাধারণত ইনভেস্ট করে টাকা ইনকাম করতে বর্তমান সময়ের রিং আইডির মত বিভিন্ন কোম্পানিতে ইনভেস্ট করাকে বোঝায়।
কিন্তু এখানে আমি আপনাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে আপনারা এসব স্ক্যামে ইনভেস্ট না করে কিভাবে নিজের স্কিল অর্জনের পিছনে ইনভেস্ট করে একটা ক্যারিয়ার দাঁড় করাবেন।
আশা করি আমার আজকের এই পোষ্টের টপিক আপনারা বুঝতে পেরেছেন এবং পোস্টে আপনাদের উপকারে আসবে বলে আমি মনে করি। ধন্যবাদ!