এখানে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম গুলো জেনে নিন। একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য ইউটিউব এর কিছু নিয়মকানুন রয়েছে।
যে নিয়মকানুনগুলো ফলো করলে খুব সহজে এবং প্রফেশনাল ভাবে একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলা যায়।
আর ইউটিউব চ্যানেল যত প্রফেশনাল মোডে হবে তত দ্রুতই ইউটিউবে সফলতা অর্জন করা যাবে।
তাই আজকের ব্লগটি পড়ে যেমন ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম জানতে পারবেন। তেমনি প্রফেশনাল ভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারলে আপনার ইউটিউব ক্যারিয়ার অনেকটাই নিশ্চয়তা হয়ে যাবে।
যার কারণ হলো বর্তমান সময়ে জনপ্রিয় অনলাইন ইনকামের মধ্যে একটি হলো ইউটিউব থেকে ইনকাম।
ইউটিউব থেকে অনেকভাবে ইনকাম করা যায়। তার মধ্যে একটি হলো ইউটিউব চ্যানেল খুলে আয় করা।
তাই আজকে আপনাদের বলবো ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সম্পর্কে।
আশা করি আজকের ব্লগটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপনি ও সহজেই একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবেন। চলুন শুরু করা যাক।
ইউটিউব কি?
আপনি যেহেতু ইউটিউব চ্যানেল খোলার চিন্তা করছেন তখনতো আগে জেনে নিতে হবে ইউটিউব কি? আসলে এখানে বলার কিছুই নেই।
বর্তমানে এমন কোনো লোক নেই যে কিনা ইউটিউব সম্পর্কে জানে না! ইউটিউব হলো একটি ভিডিও শেয়ারিং ফ্ল্যাটফর্ম।
যেখানে প্রতিনিয়ত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রা তাদের তৈরি ভিডিও কন্টেন্ট পাবলিশ বা শেয়ার করে থাকে।
বর্তমানে অন্যান্য ভিডিও শেয়ারিং ফ্ল্যাটফর্ম যেমন daily motion আরও অনেক আছে। তাদের থেকে ইউটিউব সবার শীর্ষে।
ইউটিউবের প্রথম ভিডিও শেয়ার হয় ২০১৫ সালে। সেই থেকে ইউটিউবের যাত্রা শুরু হয়। আর আজ একটি পূর্ন ইউটিউবে রুপান্তর হয়েছে।
এবং সেই সাথে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। যতগুলো ভেরিফাইড ইউটিউব চ্যানেল আছে তাদের প্রত্যেকের কম বেশি ইনকাম হয়ে থাকে।
ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
বর্তমানে অনেকে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে চায়। কিন্তু সঠিক নিয়ম না জানার কারনে তারা ইউটিউবে এসেও সফলভাবে একটি চ্যানেল খুলতে পারে না।
তাই আজকে খুবই সহজভাবে এবং সংক্ষেপে আপনাদের দেখিয়ে দিবো ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম, ইউটিউব চ্যানেল দুই ভাবে খোলা যায়।
- মোবাইল দিয়ে এবং
- কম্পিউটার দিয়ে
আমাদের অনেকেরই কম্পিউটার না থাকায় তারা মোবাইল দিয়ে খুলতে চায়। সেক্ষেত্রে অবশ্যই পারবেন।
আর যদি আপনাদের কম্পিউটার থাকে তবে আমি সাজেশন করবো কম্পিউটার দিয়েই খুলবেন। আর মোবাইল দিয়ে খুললেও কোনো সমস্যা হবে না।
মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
মোবাইল দিয়েও ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম খুবই সহজ। মোবাইল দিয়ে খুলতে চাইলে প্রথমে মোবাইলে ইউটিউব অ্যাপটি ওপেন করুন।
যদি এন্ড্রয়েড ফোন হয়ে থাকে তবে আগে থেকেই ইউটিউব অ্যাপটি থাকবে। মোবাইলে আপনি দুইভাবে চ্যানেল খুলতে পারবেন।
প্রথমত আপনার মোবাইলে ব্রাউজার থেকে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবেন। দ্বিতীয়ত আপনার মোবাইলে ইউটিউব অ্যাপ থেকেও খুলতে পারবেন। তবে আমি দুই নিয়মেই দেখানোর চেষ্টা করবো।
মোবাইলে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম ফলো করতে হলে প্রথমে ইউটিউব অ্যাপটি ওপেন করুন।
ওপেন করার পর উপরে ডানদিকে কোনায় প্রোফাইল দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করলে আপনার জিমেইল একাউন্ট দেখতে পাবেন।
যে একাউন্টে ইউটিউব খুলবেন সে একাউন্টটি লগইন করে নিবেন। তারপরে একটু নিচেই দেখতে পাবেন লেখা আছে Your Channel।
- আপনার জন্য: জিমেইল একাউন্ট খোলার নিয়ম
সেখানে ক্লিক করলেই দেখতে পাবেন ফেসবুক প্রোফাইলের মতোই যেমন Picture, এখানে আপনার যে চ্যানেল খুলবেন সেটার প্রোফাইল।
তাই ইউটিউব চ্যানেল খোলার আগে আপনার চ্যানেলের জন্য একটা লোগো ডিজাইন করে নিবেন। তারপরে নিচে দেখতে পাবেন Name; নামের একটা অপশন আছে।
এটা তো বুঝতেই পারছেন আপনার চ্যানেলের নাম। আপনার চ্যানেলের নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুন্দর একটা ইউনিক নাম নির্বাচন করবেন।
যেমন আপনি যদি টিউটোরিয়াল চ্যানেল খোলেন তবে দিতে পারেন আপনার নাম সাথে Tutorial। উদাহরন: Akash tutorial ইত্যাদি। এটা একটা উদাহরণ। আপনি চাইলে ব্যবহার করতে পারেন।
ইউটিউব চ্যানেল নাম। ইউটিউব নাম তালিকা
হুট করে মাথার মধ্যে ইউটিউব নাম আসে না। এর জন্য একটু ভাবতে হয়। এরকম কমন সমস্যা প্রায় সবারই হয়ে থাকে।
আপনি যদি ইউটিউব চ্যানেল নাম দেখতে চান তাহলে প্রথমে, আপনি যে ক্যাটাগরির উপর ভিডিও তৈরি করবেন সে ক্যাটাগরি লিখে ইউটিউব এ সার্চ দিবেন।
এবং অনেকগুলো চ্যানেল আসবে। সে চ্যানেলগুলো দেখতে থাকবেন। এবং দেখবেন যে এমনিতেই আপনার মাথায় অনেক ইউটিউব নাম চলে এসেছে।
তখন আপনার কাছে যে নামটি ভালো লাগবে সে নামটা আপনার চ্যানেলের নাম নির্বাচন করতে পারেন।
প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল সেটিং
প্রফেশনালভাবে ইউটিউব চ্যানেল সেটিং করে নিবেন। ইউটিউব অ্যাপে যাওয়ার পর CREATE CHANNEL নামে একটা বাটন আছে।
সেখানে ক্লিক করলেই আপনার চ্যানেল ক্রিয়েট হয়ে যাবে।
তারপরে EDIT এ ক্লিক করে যখন তখন আপনার চ্যানেলের নাম বদলাতে পারবেন। তবে আমি বলবো বার বার নাম পরিবর্তন করবেন না।
এতে করে নইলে আপনার সাবস্ক্রাইবার বা ভিউয়াররা কনফিউজ হয়ে যাবে। আর অবশ্যই আপনার চ্যানেলের ডেসক্রিপশন দিবেন। তারপরে নিচে আছে প্রাইভেসি।
সেখানে লেখা দেখবেন Keep all my subscriptions private, এটার মানে হলো আমরা অনেক ইউটিউব চ্যানেলে দেখতে পাই যে তাদের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা দেখা যায় না বা হাইড করা থাকে।
আপনি যদি এটি অন করেন তবে আপনার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা দেখা যাবে না।
আর যদি অফ করে দেন তবে আপনার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা কত সেটা সবাই দেখতে পাবে।
আরেকটা হলো Keep all my saved playlist private। এটার মানে হলো আপনার প্রোফাইলে যতগুলো প্লে লিস্ট আছে সেগুলো আপনার সাবস্ক্রাইবারদের কাছ থেকে গোপন বা হিডেন করা।
- আরও পড়ুন: ফেসবুক পেজ খোলার নিয়ম
আর ইউটিউব ভিডিও আপলোড করার জন্য আপনার চ্যানেলে গেলে CREATE নামে নিচের দিকে একটা বাটন দেখতে পাবেন সেটাতে ক্লিক করবেন।
তারপরে আসবে Create a short, Upload a video, Go live। আপনি যদি ভিডিও আপলোড করতে চান তবে Upload a video তে ক্লিক করবেন।
আর যদি আপনার চ্যানেল থেকে লাইভ করতে চান তাহলে Go live এ গিয়ে লাইভ করতে পারবেন।
- আরও পড়ুন: ইউটিউব ভিডিও ডাউনলোড করার নিয়ম
মোবাইলে এই এক নিয়মে চ্যানেল খোলা যায়। আরেক নিয়ম হলো আপনার মোবাইলের ব্রাউজার দিয়ে। সেটা কিছুটা কম্পিউটারের মতো তাই কম্পিউটারের টা দেখাচ্ছি।
তবে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে নেই। আপনি যেভাবেই ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম জানতে চান সেটা কোন বিষয় না।
আপনি যেটা গুরুত্বে নিবেন সেটা হচ্ছে আপনার ইউটিউব ভিডিও কনটেন্ট। মানে আপনি ইউটিউবে আপলোড করার মতো ভিডিও গুলোর দিকে বেশি নজর দিবেন।
কম্পিউটার দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
বর্তমানে ভালোভাবে ইউটিউবিং করতে হলে একটা কম্পিউটার তো লাগেই। তার মানে এই না যে আপনি মোবাইল দিয়ে পারবেন না।
এটা বলার কারন হচ্ছে বর্তমানে প্রতিযোগী বেশি। তাদের সাথে টিকতে হলে বা ইউটিউবে সফল হতে চাইলে লং টাইম এবং ভালো কোয়ালিটির কনটেন্ট তৈরি করতে হবে।
জেনে নিন কম্পিউটার দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সম্পর্কে।
কম্পিউটারে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম হলো, প্রথমে আপনার কম্পিউটারের ব্রাউজারে যাবেন।
এরপর youtube.com লিখে সার্চ দিলে ইউটিউব ওপেন হবে।
এবার মোবাইলের মতো প্রোফাইল আইকন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করবেন। একটু নিচের দিকে লক্ষ করলে দেখতে পাবেন তারপরে সহজেই একটা নাম দিয়ে শুরু করবেন।
তারপরে কাস্টমাইজ চ্যানেলে ক্লিক করে আপনার চ্যানেলটিকে সাজিয়ে নিবেন।
মনে রাখবেন সাজানো গোছানো চ্যানেল দেখতে খুবই সুন্দর এবং ইউনিক হয়ে থাকে।
ইউটিউবে কী কী বিষয়ে ভিডিও তৈরী করলে ভালো হবে
অনেকে ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর কনটেন্ট নিয়ে চিন্তিত থাকে। ইউটিউব এ কি কি বিষয় ভিডিও তৈরি করলে ভালো হবে।
কিংবা ইউটিউবে কোন কোন ভিডিও তৈরি করলে তাড়াতাড়ি সফল হওয়া যাবে। আসলে তাদের প্রশ্নগুলো খুবই যৌক্তিক।
আপনার মনে যদি এমন প্রশ্ন থাকে তাহলে আপনি সহজেই এর উত্তর জানতে পারবেন।
প্রথমে আপনাকে ভাবতে হবে ইউটিউব ক্যারিয়ারের বাহিরে আপনার কোন বিষয়ে সবচেয়ে বেশি দক্ষতা আছে।
অনেকে বিভিন্ন টেকনোলজি সম্পর্কে অনেক ভাল ধারনা রাখে। তাই তারা টেকনোলজি নিয়ে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করতে পারে।
সেখানে রয়েছে বিভিন্ন গ্যাজেট রিভিউ, মোবাইল ফোন রিভিউ, ল্যাপটপ রিভিউ আরো অনেক কিছু।
টেকনোলজি নিয়ে ভিডিও তৈরি করলে গুগল এডসেন্স ছাড়াও আরো অনেক ভাবে ইনকাম করা যায়।
অন্যান্য নামের মধ্যে রয়েছে এফিলিয়েট মার্কেটিং। ইউটিউবার মনিটাইজেশন পাওয়ার আগে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকে।
এফিলিয়েট মার্কেটিংএ সবচেয়ে বেশি ফলাফল পাওয়া যায় টেকনোলজি চ্যানেলগুলোতে। তাই আপনি চাইলে রিভিউ করতে পারেন।
টেকনোলজি ভিডিও ছাড়া আরো অনেক ভিডিও করা যায়। আমি যেমনটি বলেছি যে আপনার যে ব্যাপারে বেশি দক্ষতা আছে আপনি সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
এতে যেমন আপনার দক্ষতা বাড়বে তেমন আপনার ভিডিওর কোয়ালিটি ও ভালো হবে। এবং ভিউয়ার্সদেরকে ভালো কিছু দিতে পারবেন।
তাই একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম জানা যতটা জরুরী তার চেয়ে বেশী জরুরী হচ্ছে আপনার হাই কোয়ালিটির কনটেন্ট এবং দক্ষতা।
ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম ২০২৩
সহজে এবং প্রফেশনালভাবে ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য উপরে থাকা গাইডলাইনই যথেষ্ট। উপরে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম থেকে শুরু করে চ্যানেল নাম এবং এডভান্স চ্যানেল সেটিং করা আছে।
তাই কেউ ইউটিউব ক্যারিয়ার শুরুর জন্য চ্যানেল খুলতে চান তাদের জন্য এখানে দেয়া ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম এর গাইড এক যুগান্তরকারী পরিবর্তন হবে বলে আমি মনে করি।
কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করা যায়
ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর সেখান থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় এমন প্রশ্ন প্রায়ই থাকে।
একটি ইউটিউব চ্যানেলের মূল ইনকাম হচ্ছে মনিটাইজেশন। ইউটিউব মনিটাইজেশন সম্পর্কে অনেকের জানা আছে।
কারো যদি জানা না থাকে কিন্তু জানার আগ্রহ আছে তাহলে কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।
আজকের পোস্টটিতে মনিটাইজেশন সম্পর্কে বেশি বলবো না।
এছাড়াও আরেকটি বেশি ইনকামের সুযোগ রয়েছে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে।
বড় ইউটিউবাররা মনিটাইজেশনের পাশাপাশি এফিলিয়েট করেও প্রচুর টাকা আয় করে।
উপরে যতগুলো প্রশ্ন দেখছেন তার প্রায় সবগুলো আলোচনা করা হয়েছে। কিছু কিছু প্রশ্নের লেখা সামান্য ব্যবধান হতে পারে। তবে উত্তর একই।
শেষ কথা:
পুরো ব্লগটি পড়লে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। এবং আপনার ইউটিউব চ্যানেলকে প্রফেশনাল করতে চাইলে চ্যানেলকে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে নিবেন।