আপনারা কি অনুমান করতে পারছেন যে আগামী বিশ্বের যত ব্যবসা হবে তার 80% ই হবে অনলাইন ব্যবসা। যারা এখন থেকেই সেরা অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করবে তারা দ্রুত সময়ে সফল হতে পারবে।
কারণ আমাদের দেশে এখনো অনলাইন ব্যবসার প্রতিযোগিতা কম রয়েছে। কম বলতে পুরোপুরি কম না। তবে একটু পরিশ্রম করলে অনলাইন ব্যবসার জগতে অনেক ভালো পারফর্ম করতে পারবে।
সেজন্য আগামীতে অনলাইন জগতে ভালো ক্যারিয়ার এবং একটা ভালো ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার জন্য আজই কাজে নেমে পড়ুন।

আপনার অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া খুঁজে পেতে আমার আজকের ব্লগটি খুবই কাজে আসবে।
কারণ, আজকের ব্লগে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো সেরা এবং স্বল্প খরচে শুরু করার উপযোগী কয়েকটি অনলাইন ব্যবসা।
তাই আপনি যদি ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে গুগলে সার্চ দিয়ে থাকেন তাহলে আপনি আজকের এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
এবং এই পোস্ট এর মাধ্যমে আমি যতগুলো অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে বলব তার সবগুলোর যেটি আপনি শুরু করতে চান তাহলে কিভাবে শুরু করবেন সে ব্যাপারেও গাইড করব।
অনলাইন ব্যবসা বলতে কি বুঝায়?
অনলাইন ব্যবসা কি? এটা বুঝার জন্য প্রথমে ব্যবসা সম্পর্কে বুঝতে হবে। আমরা সচরাচর অন্যদের মুখে দিয়ে ব্যবসা সম্পর্কে শুনেছি সেই ব্যবসার মতো অনলাইন ব্যবসাটি।
সাধারণত যে কোন ব্যবসা কার্যক্রমের জন্য নির্দিষ্ট একটা রুম, অফিস কিংবা দোকান এর প্রয়োজন হয়।
আর আপনি যদি সেই ব্যবসাকে অনলাইনে রূপান্তর করতে চান তাহলে সেটি হবে অনলাইন ব্যবসা।
মানে সাধারন ব্যবসাকে যখনই অনলাইনের মাধ্যমে করা হয় তখন সেটি হচ্ছে অনলাইন ব্যবসা।
অনলাইনে ব্যবসা এর ক্ষেত্রেও অফিস কিংবা দোকানের প্রয়োজন হয়। তবে কিছু কিছু ব্যবসা রয়েছে যেগুলোতে দোকান বা অফিসের প্রয়োজন হয় না।
অনলাইন ব্যবসা কতটা যৌক্তিক?
অনলাইন ব্যবসা করাটা কতটা যৌক্তিক তা দেখা বা পূজার একটা বাস্তব উদাহরণ হচ্ছে আপনার হাতের মোবাইল ফোনটি।
দেখুন আপনি এই পোস্টটি কিন্তু আপনার হাতে থাকা মোবাইল দিয়েই পড়ছেন। এবং আপনি এই মোবাইলটি হয়তো বাজারে গিয়ে নির্দিষ্ট কোন দোকান থেকে কিনেছেন।
কিন্তু আপনি এটা জানেন কি যে এই মোবাইল গুলো এখন অনলাইনে কেনাবেচা হয়ে থাকে। এছাড়াও আপনার আশে পাশে অনেক মানুষ অনলাইন থেকে বিভিন্ন প্রোডাক্ট অর্ডার করছে।
সহজ কথায় অনলাইন ব্যবসা মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলেছে। মানুষ স্বভাবতই কঠিন ছেড়ে সহজে আসবে।
এবং এখানেই অনলাইন ব্যবসার কথাটি আসে। কারণ অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে মানুষ সহজেই ঘরে বসে কোন প্রোডাক্ট বা পণ্য হাতে পাচ্ছে।
শুধু আমি কেন যেকেউই বলবে যে অনলাইন ব্যবসা আগামীর ভবিষ্যৎ।
আমরা সবাই জানি যে সবচেয়ে বেশি টাকা উপার্জন করা যায় ব্যবসার মাধ্যমে। সুতরাং আপনি চাইলে অনলাইন ব্যবসা করে যেকোনো চাকরি থেকে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন।
অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা লাগে?
অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে সর্বমোট কত টাকা খরচ হয় তা নির্ভর করে ব্যবসায়ের উপর। অর্থাৎ আপনি কি ব্যবসা শুরু করবেন এবং সে ব্যবসায়তে কত টাকা ইনভেস্ট করবেন ইত্যাদি।
তবে প্রাথমিকভাবে কিছু খরচ থাকে যেগুলো প্রতিটা ব্যবসায় শুরুতে খরচ করা লাগে।
যেমন আপনি যদি কোন ফিজিক্যাল কিংবা ডিজিটাল প্রোডাক্ট যেটাই বিক্রি করেন আপনার সর্বপ্রথম প্রচার প্রচারণার জন্য একটা মাধ্যম লাগবে।
সেটা যেকোনো মাধ্যম হতে পারে। যেমন ফেসবুকের মাধ্যমে কিংবা ইউটিউব এর মাধ্যমে। অথবা একটা ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে।
এখানে আপনার অনলাইন ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটা কম্পিউটার এর প্রয়োজন আছে।
এবং আপনার মূল অথবা সর্বপ্রথম খরচ হিসেবে একটা কম্পিউটার কিনতে হবে।
আপনার কাজের অনুযায়ী কম্পিউটারের দাম নির্ভর করে। যেমন আপনি যদি একটা টিম নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তাহলে আপনার হাই কোয়ালিটির কয়েকটা কম্পিউটারের প্রয়োজন আছে।
এরপর আপনি যে ব্যবসা শুরু করবেন সে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য যে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন সে ওয়েবসাইটের খরচ আছে।
এছাড়া অসংখ্য খরচ আছে যেগুলো অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে প্রয়োজন হয়। নিচে অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া গুলো রয়েছে।
সেগুলোতে উল্লেখ করা আছে যে কোন আইডিয়াতে ব্যবসা করলে কত টাকা খরচ হবে।
অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া
যারা এতক্ষণে এসে জানতে চাচ্ছেন যে সেরা কিছু অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে। সে আইডিয়া গুলো কি? এবং কোন আইডিয়াটি কাজে লাগিয়ে অনলাইন ব্যবসা করা যাবে।
তাহলে চলুন দেখে নেই সেরা কিছু অনলাইন ব্যবসা। যেগুলো হয়তো শুরু করে আপনি আপনার ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
১. সাপোর্ট ব্যবসা
আপনি হয়তো ভাবছেন যে সাপোর্ট ব্যবসা মানে কি? এটা আসলে কি? এখানে সাপোর্ট ব্যবসা বলতে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মাধ্যমে একটা ব্যবসা চালানো। আমি পুরা ব্যপারটাকে এক্সপ্লেইন করছি।
আমাদের দেশের কনটেন্ট ক্রিয়েটররা, অর্থাৎ যারা ফেসবুক এবং ইউটিউবে ভিডিও বানায় তাদের অধিকাংশ ক্রিয়েটর জনপ্রিয় হবার পর যেকোনো একটা ব্যবসা শুরু করে দেয়।
এক্ষেত্রে সবার আর ব্যবসা করে না। যারা ব্যবসা করে না তাদেরকে কাজে লাগিয়ে আপনি একটা সাপোর্ট ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
মানে আপনি একটা প্রোডাক্ট তৈরি করবেন। এখন সেই প্রোডাক্টটি কোনো কনটেন্ট ক্রিয়েটরের মাধ্যমে প্রমোশন এবং বিক্রয় করতে পারেন।
এখানে প্রোডাক্টটি আপনি নিজে দিচ্ছেন। এবং কনটেন্ট ক্রিকেটারদের মাধ্যমে বিক্রয় করছেন। এই পুরো ব্যাপারটি হচ্ছে সাপোর্ট বিজনেস।
কিভাবে সাপোর্ট ব্যবসা শুরু করবো?
আপনি যদি ব্যবসাটি শুরু করতে চান তাহলে খুব সহজেই শুরু করতে পারবেন। এজন্য প্রথমে আপনাকে প্রোডাক্ট সিলেক্ট করতে হবে।
আমি একটি টি-শার্ট ব্যবসার উদাহরণ দিয়ে শুরু করি। আপনি যদি টি-শার্ট সাপোর্ট ব্যবসা শুরু করেন তাহলে প্রথমে টি-শার্ট গুলো সংগ্রহ করতে হবে।
(যারা টি-শার্ট ব্যবসা শুরু করতে চান তারা টি-শার্ট ব্যবসা সম্পর্কিত সকল তথ্য নিচের আর্টিকেলটিতে জেনে নিন)
এজন্য প্রথমে কোন বড় ব্যবসায়ী কিংবা কোন গার্মেন্টস এর সাথে ডিল করতে হবে। এবং আপনার প্রোডাক্টগুলো হাতে পাওয়ার পর সেগুলো প্রচারণার জন্য একটা ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুক পেজ থাকতে হবে।
এরপরে কনটেন্ট ক্রিকেটারদের মাধ্যমে সেগুলো প্রমোশন এবং বিক্রয় কাজ করতে হবে। এজন্য আপনি কনটেন্ট ক্রিকেটারদের সাথে যোগাযোগ করে ডিল টি করতে হবে। (আইডিয়াঃ খালিদ ফারহান)
২. এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যবসা
এই এক্সপোর্ট এবং ইমপোর্ট ব্যবসায়ের সাথে অনেকের পরিচিতি আছে। সাধারণত এক্সপোর্ট বলতে দেশে থাকা প্রোডাক্টগুলো কে অন্যান্য দেশেও বিক্রয় করা।
আর ইমপোর্ট বলতে অন্য দেশের কোন প্রোডাক্ট বেশি কিনে আনা। তবে আপনি চাইলে এক্সপোর্ট এর চেয়েও ইমপোর্ট ব্যবসায় বেশি নজর দিতে পারেন।
মানে বাইরের দেশের প্রোডাক্ট গুলো কিনে এনে দেশে বিক্রয় করা। এই প্রক্রিয়াকে ব্যবসায়ের ভাষায় পুনঃরপ্তানি বলা হয়।
সাধারণত এক্সপোর্ট এর চেয়েও ইমপোর্ট বেশি জনপ্রিয়। কারণ আমাদের দেশ থেকে প্রোডাক্ট বাইরে বিক্রির চেয়েও বাহিরের দেশ থেকে প্রোডাক্ট আমাদের দেশে বেশি আমদানি হয়ে থাকে।
কিভাবে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট এর ব্যবসা শুরু করবেন
সাধারণত আজকে আমি ইমপোর্ট ব্যবসা শুরুর করব। আপনি স্বল্প পুঁজিতে এই একটি ইমপোর্ট ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
আপনি প্রথমে একটি ফেসবুক পেইজ এবং একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন।
এরপর আপনি যে প্রোডাক্ট গুলো বিক্রি করবেন সে প্রোডাক্ট গুলোকে তালিকাভুক্ত করবেন। মানে আপনার অডিয়েন্স টার্গেট করতে হবে।
এখানে আপনার অডিয়েন্সরা কি পছন্দ করবে? এবং সেগুলো বাজেট কেমন হবে? এরকম ছোটখাটো রিসার্চ করতে হবে।
এরপর সে প্রোডাক্ট গুলোর ছবি কালেক্ট করে নিবেন। যদি আপনাদের শুরুতে বাজেট বেশি না থাকে তাহলে অর্ডার এর অপেক্ষা করবেন।
কেউ যদি অর্ডার দিয়ে থাকে সেই অর্ডারের ভিত্তিতে আপনি মালগুলো ইমপোর্ট করবেন। তবে এটা শুধুমাত্র বাজেট কমের ক্ষেত্রে।
মনে রাখবেন যে এই পদ্ধতিতে আপনার ক্রেতারা কখনো স্যাটিস্ফাইড হবে না। কারণ তারা দ্রুত সময়ে ডেলিভারি প্রত্যাশা করবে।
যাইহোক আমি যতগুলো আইডিয়া দিচ্ছি তার সবগুলো আপনি ভিন্নভাবে রিসার্চ করবেন। মনে রাখবেন এটা একটা ব্যবসা এবং আপনার ক্যারিয়ার গড়ার টার্গেট।
৩. ডিজিটাল সার্ভিস বিক্রয়
এখনকার সময় যারা ব্যবসা নিয়ে রিসার্চ করে থাকেন তারা ডিজিটাল সার্ভিস সম্পর্কে শুনে থাকবেন। যাইহোক যারা শুনেনি তাদের কাছে “ডিজিটাল সার্ভিস” এর পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।
ধরুন আপনি একটি ওয়েবসাইট শুরু করতে যাচ্ছেন। এখন আপনাকে প্রথমে ডোমেইন হোস্টিং কিনতে হবে।
এখন আপনি যে কোম্পানির কাছ থেকে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনেছেন সেই কোম্পানি আপনাকে হাতে কিছু দিয়েছে?
মোটেও না! কোম্পানিটি শুধু আপনাকে একটা ইউজার একাউন্ট এবং পাসওয়ার্ড দিয়েছে। যেটা দিয়ে আপনি এডমিন প্যানেলে লগইন করেছেন।
এই পুরো সার্ভিসগুলো এই হচ্ছে ডিজিটাল সার্ভিস। মানে যেই প্রোডাক্টগুলোর গুরুত্ব আছে কিন্তু ফিজিক্যালি প্রোডাক্ট গুলো দেখা যায় না সেই প্রোডাক্টগুলো হচ্ছে ডিজিটাল প্রোডাক্ট।
ডিজিটাল প্রোডাক্ট এর সুবিধা হচ্ছে যখন তখন শুরু করা যায়। ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট এর মত দোকান কিংবা অফিসের ঝামেলা থাকে না।
কিভাবে ডিজিটাল সার্ভিস এর ব্যবসা শুরু করবেন
আপনাকে ডিজিটাল সার্ভিস শুরু করার জন্য প্রথমেই ডিজিটাল সেবা কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে। মানে একটি ওয়েবসাইট এবং একটি ফেসবুক পেজ।
ডিজিটাল সার্ভিস ব্যবসা এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পার্ট হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং। আপনি একটি ওয়েবসাইট অন্যান্য প্রোডাক্ট এর buy link এর মাধ্যমে ডিজিটাল সার্ভিসগুলো বিক্রয় করে ইনকাম করতে পারবেন।
মানে অন্যের একটি প্রোডাক্ট আপনি আপনার ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে বিক্রয় করে দিলে সেই প্রোডাক্টটা কি আপনি একটা কমিশন লাভ করবেন।
এই ব্যবসাতে তেমন কোনো পুঁজির প্রয়োজন হয় না। কারণ প্রোডাক্টটি অন্য কারোর। আপনি শুধু তার প্রোডাক্টটি বিক্রয়ের দায়িত্ব নিবেন।
ব্যাস! এভাবেই আপনি ডিজিটাল সার্ভিস বিক্রয় করে একটি রমরমা ব্যবসা করে তুলতে পারবেন।
শেষ কথাঃ
এখানে উল্লেখ করা প্রতিটা অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া খুবই ইউনিক। এবং বর্তমানে একটা ভালো ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবেন এই আইডিয়াগুলো মাধ্যমে।
এবং প্রতিটা আইডিয়া কি এবং কিভাবে শুরু করবেন সবকিছু বিস্তারিত বলার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনারা যে রকম অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া খুঁজছেন সেরকম পেয়েছেন।
আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে দিন ধন্যবাদ!