বর্তমানে অনলাইনের আধিপত্যের ফলে মানুষজনের নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্য এখন অনলাইনে পাওয়া যায়। এমনকি গত এক দশক আগেও যেখানে মানুষজন অনলাইন কেনাকাটা কি এটাই জানত না আর এখন মানুষজন প্রয়োজনের সকল পণ্য মিনিটেই অনলাইন থেকে অর্ডার দিচ্ছে।

মূল ব্যাপার হচ্ছে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষজন নিজেকেও পরিবর্তন করেছে।
এমনকি ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা হওয়াতে একজন আরেকজনের ফ্যাশন ফলো করছে।
যেমন আমরা যদি বলি যে আমেরিকান কোন এক সেলিব্রেটি তার পোষাক থেকে শুরু করে তার লাইফ স্টাইল কিভাবে পরিচালনা করছে এটা যে কোন দেশের যে কেউ ফলো করতে পারে।
এর মধ্যেই দেখা যায় আমেরিকান’রা পোশাক পরে সেটা আমাদের স্থানীয় বাজারগুলোতে পাওয়া যায় না।
এই প্রোডাক্ট গুলো ইমপোর্ট করার মাধ্যমে ব্যবহার করার সুযোগ হয়ে থাকে।
কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ একটা পোশাকের ব্যবহারের জন্য প্রোডাক্ট ইমপোর্ট করা সম্ভব হয় না।
তাই তারা অনলাইন থেকে দেশ কিংবা দেশের বাইরের কোন প্রতিষ্ঠান থেকে সে প্রোডাক্টগুলো/পোশাক অর্ডার করে থাকে।
তাছাড়াও মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটা প্রোডাক্ট বা পন্য কেনা লাগেই।
সেক্ষেত্রে আধুনিক এই যুগে মানুষজন কেনাকাটা স্মার্টনেস আনার জন্য অনলাইন কেনাকাটা ‘র দিকে বেশি ঝুঁকছে।
তাই আজকে আমি এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সাথে আলোচনা করব যে কিভাবে আপনি অনলাইন থেকে কেনাকাটা করবেন।
এবং অনলাইনে কেনাকাটার জন্য বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট গুলো কি কি?
আর অনলাইন থেকে কেনাকাটা করার পূর্বে ভালো প্রোডাক্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো অনুসরণ করবেন।
তাহলে চলুন আপনার কেনাকাটা স্মার্টনেস আনার জন্য অনলাইনে কেনাকাটা এক ধাপ এগিয়ে যাই।
অনলাইন কেনাকাটার আধিপত্য
স্বাভাবিকভাবে আমেরিকাতে অনলাইন কেনাকাটা শুরু হয়েছিল সেই ৯০ দশকে।
কিন্তু তখনও দেখা গেছে যে খুচরা বাজারের আইটেমগুলো মাত্র ৫ থেকে ৬ শতাংশ অনলাইনে বিক্রি হতো।
এরপর থেকে ধীরে ধীরে অনেকগুলো অনলাইন কেনাকাটার কোম্পানি আধিপত্য ঘটায়।
যেমন ছিল amazon, এরপর এলন মাস্কের ebuy, কিংবা আলি এক্সপ্রেস।
এ কোম্পানিগুলো অনলাইন কেনাকাটা আধিপত্য ঘটালেও মানুষজন অনলাইন কেনাকাটায় অভ্যস্ত না থাকায় এই সেক্টরটি গ্রো হয় নাই।
এরপরেই যখন কোভিডের সময় শুরু হয় তখন মানুষজন ঘর থেকে বের হতে না পারায় বাধ্য হয়ে অনলাইনে অর্ডার করতে থাকে।
ঠিক তখনই শুরু হয় অনলাইনে কেনাকাটার এক আধিপত্য।
সারা বিশ্বের প্রতিটা মানুষ নিজে সুরক্ষা থাকার জন্য অনলাইনে কেনাকাটা করতে শুরু করে।
এর প্রভাব শুরু হয় বাংলাদেশেও।
আমরা সবাই জানি যে বাংলাদেশের দারাজ খুব জনপ্রিয়।
কিন্তু আপনি জানেন কি দারাজ বিগত ১০ বছরের বেশি সময় ধরেও বাংলাদেশে ব্যবসা করে আসছে।
তবে আমরা ঠিক অল্প কয়েকজনই দারাজকে কোভিডের আগ থেকে জানতাম।
এই করণা-কালে বাংলাদেশের ও অনলাইন কেনাকাটার প্ল্যাটফর্ম গুলো খুব জনপ্রিয় হতে শুরু করে।
মূলত এই কেনাকাটার প্লাটফর্ম গুলোকে ই-কমার্স বলা হয়ে থাকে।
কিভাবে আপনারা ই-কমার্সের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিবেন এবং কিভাবে ই-কমার্স থেকে পণ্য কেনা সময় ভালো পণ্য কিনতে পারবেন এ ব্যাপারে আমি একটা বেসিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।
বাংলাদেশি অনলাইন কেনাকাটা ’র প্ল্যাটফর্ম
অনলাইন কেনাকাটার আবিপত্তর পর থেকে বাংলাদেশে অনেকগুলো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দেখা গেছে।
তবে কিছু কিছু প্ল্যাটফর্ম মানুষের সাথে প্রতারিত করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে।
এর মধ্যে একটা হল ইভালি। যেটা কিভাবে মানুষকে প্রতারিত করেছে এটা আমরা সবাই দেখেছি।
তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিশ্বস্ততার সাথে কিংবা দীর্ঘ সময় ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে দারাজ।
এমনকি তাদের ব্যবসায়ের পরিসর অনেক বড় হওয়াতে তাদের নিজস্ব পরিবহন সুবিধা রয়েছে।
এখন পর্যন্ত যতগুলো ডেলিভারি কোম্পানি রয়েছে তাদের সবার মধ্যে প্রতিযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যে অল্প খরচে কাস্টমারের কাছে তার পণ্য পৌঁছে দিতে দারাজ সবার থেকে এগিয়ে।
বাংলাদেশে যে শুধু দারাজই ব্যবসা করছে এমনটা কিন্তু নয়।
আপনি যখনই ফেসবুকে লগইন করবেন তখনই আপনার সামনে অনেকগুলো প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন আসবে।
যতগুলো ফেসবুক পেজ থেকে এই প্রোডাক্ট গুলোর বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে ততগুলো পেজ কোন না কোন অনলাইন কেনাকাটার সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে।
তাই সে দিক বিবেচনা করলে দেখা যায় বাংলাদেশে অসংখ্য ই কমার্স বা এফ কমার্স ব্যবসা প্রতিনিয়ত পরিচালিত হচ্ছে।
তবে এটা বলা চলে যে সফলতা এবং বিশ্বস্ততার সাথে সবার চেয়ে ভালোই তোমার ব্যবসা করছে দারাজ।
যেহেতু বাংলাদেশে অসংখ্য ছোট বড় অনলাইন শপিং হয়েছে তাই সবগুলো লিস্ট সংগ্রহ করার জন্য আমি এআই এর সহায়তা নিয়েছি।
সেক্ষেত্রে বলাই চলে যে সবগুলো তথ্য সঠিক নাও হতে পারে।
তাহলে এক নজরে দেখে নিন বাংলাদেশের সেরা কয়েকটি অনলাইন শপঃ
- দারাজ
- আজকের ডিল
- চাল ডাল
- স্টোরকিপার
- ফুডপান্ডা
এবং এখানে উল্লেখ করা এই ই-কমার্স কোম্পানিগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য বিখ্যাত।
যেমন এখানে যদি আপনি দারাজের কথা চিন্তা করেন দারাজে আপনি আপাতত সবকিছু পেয়ে যাবে।
আবার খাবার-দাবার আইটেমের কথা চিন্তা করলে ফুড ফান্ডা সবার উপরে থাকবে।
অনলাইন কেনাকাটা ’র সুবিধা
অনলাইনে কিংবা অফলাইনে যেখানে কেনাকাটা করেন না কেন আপনার প্রথম যে সুবিধার দিকে নজর দিতে হবে সেটা হবে আপনার সময়।
মানে এমনও হওয়ার কথা না যে আপনি কোন দোকানে কিছু কেনার জন্য গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকবেন।
কিন্তু আমাদের দেশে খাবার আইটেমগুলো ছাড়া নাকি আইটেমগুলোতে অর্ডারের পর ৭২ ঘন্টা কিংবা তার বেশি সময় লেগে যায়।
তাই অনলাইন কেনাকাটার ক্ষেত্রে সময়ের সুবিধা ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন রকম হতে পারে।
তবে বাংলাদেশে অনলাইন কেনাকাটার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সুবিধা হচ্ছে স্বাচ্ছন্দ বোধ।
এখন পর্যন্ত অনলাইনে কেনাকাটা সচরাচর না হওয়ায় অনেকে শখ করে অনলাইনে অর্ডার করে থাকে।
যদিও শহরে এমনটা কম হয় কিন্তু গ্রামে এমনটাই বেশিরভাগ হয়ে থাকে।
আবার আরেকটা বড় সুবিধা সেটা হলো লোকাল মার্কেটে কোন প্রোডাক্ট না পাওয়া গেলে সেটা সহজেই অনলাইনে পাওয়া যায়।
আর বিভিন্ন সময় গুলোতে বিভিন্ন ডিসকাউন্ট অফার সব সময় লেগেই থাকে।
এছাড়াও অনলাইন কেনাকাটা আরো অনেক সুবিধা রয়েছে।
আবার অসুবিধা অনেক রয়েছে।
কিন্তু আজকে আমি কোন প্রকার অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করব না যার কারণে হলো বাংলাদেশ এখনো মানুষজন অনলাইন কেনাকাটায় অভ্যস্ত হয়নি।
তাই আগে অসুবিধা কথা বলে মানুষকে হয়রানি না করাই ভালো হবে।
কিভাবে অনলাইনে কেনাকাটা করবেন?
সাধারণত আপনি অনলাইনে কোন কিছু কেনাকাটা করতে গেলে এটা তেমন কোন কঠিন কিছু না।
তবে আপনি যেভাবে অনলাইনে কেনাকাটা করেন না কেন প্রথমে আপনাকে ই-কমার্স প্লাটফর্ম সিলেক্ট করতে হবে।
কারণ বাংলাদেশি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নির্দিষ্ট কোন আইন না থাকায় যে কেউ এই ব্যবসা শুরু করে দিচ্ছে।
তাই আপনি যাদের থেকে প্রোডাক্ট নিবেন তাদের যদি নির্দিষ্ট কোন ট্রেড লাইসেন্স না থাকে সেক্ষেত্রে আপনি তাদের কাস্টমারের রিভিউ দেখতে পারেন।
রিভিউ দেখার সময় একটা ব্যাপার মাথা রাখবেন যে এখনকার দিনে প্রতারণা অনেক ভাবেই হচ্ছে।
কারন যারা এই ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করে তারা নিজেরাই অন্যদের দিয়ে রিভিউ গুলো নিয়ে থাকে।
আপনাকে খুব সচেতনতার সাথে নজর রাখতে হবে।
এবার আপনি যে প্রোডাক্টটি কিনবেন ওই প্রোডাক্টের স্পেসিফিকেশন দেখে নিবেন।
বিশেষ করে জামা কাপড় কেনার সময় জামা কাপড় গুলোর সাইজ দেখে নিবেন এবং কালারসহ কাপড়ের বিস্তারিত দেখে নিবেন।
যদিও অনলাইনে কাপড় হাতে ধরে দেখা যায় না তবে যারা কাপড়গুলো বিক্রি করে তারা সাধারণত কাপড় গুলোর ধরন কেমন হবে তা উল্লেখ করে দেয়।
প্ল্যাটফর্ম এবং প্রোডাক্ট সিলেক্টর পর প্রডাক্টটি কিভাবে ডেলিভারি নিবেন এবং ডেলিভারি খরচ কার এবং কিভাবে হবে তা জেনে নিবেন।
যেমন আপনি যদি দারাজ থেকে কিনতে যান তাহলে আপনি নির্দিষ্ট কিছু প্রোডাক্ট এবং নির্দিষ্ট দিনে ফ্রি ডেলিভারি পাবেন।
এবং ডেলিভারি করার সময় আপনার লোকেশন বা ঠিকানা যথাযথভাবে দিবেন।
লোকেশন বা ঠিকানা দেওয়ার সময় কোন সন্দেহ বা সমস্যা হলে আপনি ওই সেলার এর সাথে কথা বলে নিতে পারেন।
এভাবে আপনি স্টেপগুলো ফলো করলে অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।
কিংবা আপনার কেনাকাটায় এক্সপেরিয়েন্স অনেক বেড়ে যাবে।
শেষ কথাঃ
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার ক্ষেত্রে অনলাইন কেনাকাটা অনেক স্মার্ট ভাবে করতে হবে।
তবে এর মাঝে একটা ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে যে যাতে করে কেনাকাটার সময় কোন প্রকার সমস্যা না হয়।
কিংবা কখনো যেনো কোনো প্রকার বাজে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে না হয় সেজন্য এখানে একটা সংক্ষিপ্ত গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে।
আর যারা অনলাইন ব্যবসা সম্পর্কে ইন্টারেস্টের তারা আজই শুরু করে দিতে পারে নিজের একটি অনলাইন ব্যবসা।
- অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া – সেরা আইডিয়াগুলো দেখে নিন

Hello, I am Mehedi. You can call me (Hasan N). and on this site, I share informative and tech-related articles. Explore more on my site.